থার্টি ফার্স্ট নাইট: ১৬ ঘণ্টা ‘অবরুদ্ধ’ থাকছে পতেঙ্গা-পারকী
৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৫৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ উদযাপনের নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এবারও চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও পারকী সমুদ্র সৈকতে ১৬ ঘণ্টা কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না নগর পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেছেন, জনসাধারণের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর নন্দনকানন পুলিশ প্লাজা মার্কেটের উন্নয়ন সংক্রান্ত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান সিএমপি কমিশনার। এছাড়া সিএমপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজেও এ সংক্রান্ত ১৬ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত পতেঙ্গা ও পারকী সমুদ্র সৈকতে কেউ অবস্থান করতে পারবে না।
সিএমপি কমিশনার জানিয়েছেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট ও খ্রিস্টীয় বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরজুড়ে সতর্ক অবস্থানে থাকছে পুলিশ। সমুদ্র সৈকতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
‘বিভিন্ন সময় আমরা দেখি থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের নামে রাতের বেলা অহেতুক বেপরোয়া গাড়ি চালানোর একটি প্রবণতা থাকে। এতে ঘটে দুর্ঘটনা। থার্টি ফার্স্ট নাইটের উদযাপন সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা থাকবে। উদযাপন করতে গিয়ে যাতে কেউ অন্যকে বিরক্ত না করে, কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটা আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। আগে যেভাবে সীমাবদ্ধভাবে থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করা হয়েছে, এবারও সেভাবেই হবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা সড়কের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে।’
কোনো ধরনের হুমকি আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম কোনো ইনফরমেশন (তথ্য) আমাদের কাছে নেই। তবে আমরা সতর্ক আছি, যেকোনো ধরনের বিপর্যয় ঘটলে যাতে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারি। আমাদের স্পেশালাইজড অর্গানাইজেশন (সোয়াট, বোম ডিসপোজাল ইউনিট) আছে, সেগুলোকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পহেলা জানুয়ারি সরকারি ছুটির অংশ না হলেও অনেকেই বছরের প্রথম দিন উদযাপন করতে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে যাবেন। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে পরিবারের সঙ্গে একটি ভালো দিন কাটাতে পারেন, সেজন্য পুলিশ সদস্যরা সব জায়গায় থাকবে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রামের অন্যতম একটি বিনোদন কেন্দ্র। নিরাপত্তার সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা সন্ধ্যা ৬টার পর যাতে কোনো দর্শনাথী সেখানে যেতে না পারে সে ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছি।’
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ, উপ-কমিশনার (সদর) আব্দুল ওয়ারিশ, উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত উপ- কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সিএমপির ১৬ দফা নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নগরীর বিভিন্ন রাস্তা, ফ্লাইওভার, ভবনের ছাদে ও প্রকাশ্য স্থানে জমায়েত কিংবা কোনো ধরনের উৎসব আয়োজন করা যাবে না।
অনুমোদন নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও নারীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করতে হবে।
২০২৩ সাল উদযাপনের নামে কোনো ধরনের পটকা কিংবা আতশবাজি ফোটানো যাবে না। ভবনের ছাদে আতশবাজি ফোটানো হলে ভবনের মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিজে পার্টির নামে কোনো হোটেলে স্থান বা কক্ষ ভাড়া না দিতেও হোটেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, শনিবার বিকাল থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না। সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সকল প্রকার বার এবং রাত ১০টা থেকে ফাস্ট ফুডের দোকান ও মার্কেট বন্ধ রাখতে হবে।
উচ্চশব্দে গাড়িতে হর্ন ও বেপোরোয়া গতিতে গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল না চালানোরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সতর্ক করেছে পুলিশ।
কোন ঘটনা বা দুর্ঘটনার খবর জানাতে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ কিংবা সিএমপির নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০৩১-৬৩৯০২২, ০৩১-৬৩০৩৫২, ০৩১-৬৩০৩৭৫, ০১৩২০০৫৭৯৯৮ ০১৬৭৬১২৩৪৫৬ নম্বরে ফোন করে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সারাবাংলা/আইসি/এনএস