Monday 24 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘২০০৫ সালে মেট্টোরেলের কাজ শুরু করেছিলেন খালেদা জিয়া’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৪০ | আপডেট: ১ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:০৭

ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ২০০৫ সালে ঢাকায় মেট্টোরেলের কাজ শুরু করেছিলেন বলে দাবি করেছে দলটির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

মেট্টোরেল উদ্বোধনের দুই দিন পর শনিবার (৩১ ডিস্বের) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি।

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘২০০৫ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আমলেই বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ঢাকায় স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান (এসটিপি) তৈরি করে মেট্রোরেলের নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হলেও তা মুছে ফেলার অক্লান্ত চেষ্টা করছে প্রতিহিংসা পরায়ণ সরকার।’

তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালে এসটিপি প্রণয়ন, অনুমোদন এবং শহরের পরিবহন নেটওয়ার্কের জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। এ পরিকল্পনায় ৩টি এমআরটি/বিআরটি লাইন নির্মাণের কাজ ২০১০ সালের আগেই শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে এমআরটি লাইন-৬ এবং বিআরটি লাইন ব্যতীত, অন্যান্য প্রকল্পগুলো পরে যুক্ত হয়েছে। ওই সময়ে এমআরটি লাইন ৬-কে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করে ২০১০-১১ অর্থবছরে সমীক্ষা জরিপ চালানো হয়। মূলত ২০০৫ সাল থেকেই মেট্রোরেল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয় এবং জাপানের আন্তরিকতায় দীর্ঘ ১৮ বছর পর যা সফলতার মুখ দেখেছে।’

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই মাঝপথে তাড়াহুড়া করে এই মেট্রোরেলের উদ্বোধন নিয়ে জনমনে ঘোরতর সন্দেহ দানা বেঁধেছে। বন্দুকের নলের মুখে দেশবাসীকে জিম্মি করে ১৪ বছর মসনদে বসে থাকা এই বিনা ভোটের সরকার বুঝতে পারছে তাদের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। গুম, খুন, হামলা, মামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন ও কণ্ঠরুদ্ধ করে ক্ষমতায় থাকার দিন ফুরিয়ে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ কাজ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেখ হাসিনা সেই পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ভরসা পাচ্ছেন না। এই কারণে উন্নয়ন দেখাতে কাজ অসমাপ্ত রেখেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে তাড়াহুড়া করে মেট্রোরেলের একাংশ জনসাধারণের চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেছেন তিনি’— বলেন সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

‘দেশের সবই তো আমরা করছি, শেখ হাসিনার সরকার করেছে। সবই শেখ হাসিনা করছেন’— মেট্টোরেল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া এমন বক্তব্যে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘দেশের জনগণ জানে জিয়াউর রহমান এবং তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশেনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরেই উন্নয়নের সোপানে উঠেছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আখ্যা পাওয়া তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ গুছিয়ে স্বনির্ভর ও আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন জিয়াউর রহমান।’

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের ২১ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৬ এর খরচ অন্য দেশের তুলনায় তিন থেকে চারগুণ বেশি করা হয়েছে নানা অজুহাতে। এর আগে ২০১৩ সালে ৬৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে দেশে ২০টি ডেমো ট্রেন এনে ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন করেছিল এই সরকার। যা কিছুদিনের মধ্যে ভাঙারিতে পরিণত হয়।’

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘মেট্রোরেল নির্মাণকারী ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কস্ট অব কনস্ট্রাকটিং মেট্রোরেল ইন ইন্ডিয়া ভার্সেস ঢাকা মেট্রো!’ র্শীষক এক বিশ্লেষণে ভারতের ৮টি শহরের সঙ্গে ঢাকার মেট্রোরেল নির্মাণ ব্যয়ের তুলনা করা হয়। এতে দেখা গেছে, ভারতের বিভিন্ন শহরে মেট্রোরেল নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি ব্যয় ৪ থেকে ৬ কোটি ডলার। অথচ ঢাকার উত্তরা থেকে কমলাপুর ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি খরচ হচ্ছে ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ভারতের বেঙ্গালুরুতে মেট্রোরেল (দ্বিতীয় পর্যায়) নির্মাণ প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১৪ সালে। ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মেট্রোরেলের ১৩ দশমকি ৭৯ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ৬১টি স্টেশনের মধ্যে ১২টি মাটির নিচে। এরপরও মেট্রোরেলটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪৭০ কোটি ডলার। এতে কিলোমিটার প্রতি ব্যয় পড়ছে ৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। মেট্রোরেলটির একটি অংশ ২০১৮ সালে শেষ হয়েছে ও বাকি অংশ ২০২৩ সালে শেষ হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) এড. আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দফতরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাকেব সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এনএস

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর