চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার পরিবহন কমেছে
১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সদ্যসমাপ্ত বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহন বাড়লেও কনটেইনার পরিবহন কমেছে। বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ঋণপত্র খোলার হার কমার প্রভাব পড়েছে কনটেইনার পরিবহনে।
বন্দর কর্মকর্তাদের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ও এর আওতাধীন কমলাপুর কনটেইনার ডিপো ও পানগাঁও নৌ টার্মিনালের দিয়ে আমদানি-রফতানি ও খালি মিলিয়ে প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা হিসেবে কনটেইনার পরিবহন হয়েছে ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪টি। ২০২১ সালে ৩২ লাখ ১৪ হাজার কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। এ হিসেবে প্রায় আড়াই শতাংশ কমেছে কনটেইনারে পণ্য পরিবহন।
এর আগে, ২০২০ সালে ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭, ২০১৯ সালে ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ১৮৭, ২০১৮ সালে ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৯৬ এবং ২০১৭ সালে ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৩ কনটেইনার পরিবহন করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর।
কনটেইনার পরিবহন কমলেও সব ধরনের পণ্য পরিবহন ২০২২ সালে আগের বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। ২০২২ সালে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮২ মেট্রিকটন পণ্য পরিবহন হয়। ২০২১ সালে পরিবহন হয় ১১ কোটি ৬৬ লাখ। পণ্য পরিবহন বেড়েছে ২ শতাংশের কিছু বেশি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার মেট্রিকটন এবং ২০১৯ সালে ১০ কোটি ৩০ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিকটন।
২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ৩৬১টি। ২০২১ সালে এসেছিল ৪ হাজার ৫৪টি। ২০২০ সালে ৩ হাজার ৭২৮টি এবং ২০১৯ সালে ছিল ৩ হাজার ৮০৭টি।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাবে ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার পরিবহন এবং বন্দরে জাহাজ আসার পরিমাণ কমে যায়। তবে একবছরের মাথায় কনটেইনার পরিবহন ও জাহাজ হ্যান্ডলিং আবারও অগ্রগতির ধারায় ফিরেছিল। কিন্তু ২০২২ সালে এসে অগ্রগতি আবারও থমকে গেছে।
বন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ডলার-সংকট দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। রেমিট্যান্স এবং রফতানি খাতে মন্দার কারণে রিজার্ভে টান পড়ে। এ কারণে বিলাস পণ্য এবং অতি জরুরি নয় এমন সব পণ্যের ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে সরকার। ফলে বছরের শেষদিকে এসে দেশে আমদানি অনেক কমে গেছে। এতে কনটেইনারবাহী পণ্যের আমদানি-রফতানি কমায় পরিবহনও কমেছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে কনটেইনার পরিবহন কমেছে। এটা বন্দরের অভ্যন্তরীণ কোনো সংকট নয়, বৈশ্বিক সংকট। এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে বন্দর আবারও স্বাভাবিক অগ্রগতির ধারায় ফিরবে।’
১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহন শুরু হয়। দেশের আমদানি-রফতানি খাতের ৯৮ শতাংশ কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরিবহন হয়। বাকি দুই শতাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে হয়।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস