Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকায় পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে নামায় উদ্বেগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৫৪

ঢাকা: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বরেন্দ্র এলাকাগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে নামছে পানির স্তর। নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের অভাবে নানা পানিবাহিত রোগও বাড়ছে। দেশে সাত কোটি মানুষ নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত। এ ছাড়া সাড়ে সাত কোটি মানুষ নিরাপদ স্যানিটেশন থেকে বঞ্চিত। এমন অবস্থায় আগামীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে রাউন্ড টেবিল ডিসকাশন অনুষ্ঠানে বক্তারা এ সব কথা বলেন। এনজিও ফোরাম, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রেসি ফোরাম ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ও সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ডা. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘ঢাকার চারপাশের নদী এবং বুড়িগঙ্গার পানিকে এখনও পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ করতে পারিনি। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জন করতে হলে একটি জেলাকে নিয়ে ভাবলে হবে না। ঢাকার পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এক সময় এখান থেকে পানি তোলাই কঠিন হয়ে যাবে। এগুলো আমাদের ভাবতে হবে। সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘যে পানিটা মানুষ ব্যবহার করবে, সেটি যেন দূষণমুক্ত হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে যে পানিগুলো ব্যবহার হয়, সেগুলো কিন্তু রিসাইকল করা হয় না। ওই পানিগুলো রিসাইকেল করা হলে বিশুদ্ধ পানির সংকট অনেকাংশে সমাধান হতো। এটি করতে হলে আমাদের মন-মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিরেক্টর আনোয়ার জাহিদ বলেন, ‘নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করতে হলে আমাদের ভাবতে হয় সবার জন্য পানি আছে কি না। ৯৭ ভাগ লবণ পানি, ৩ ভাগ বরফ ও ১ ভাগেরও কম পানযোগ্য পানি। এর থেকেই খাবার পানি। বর্তমানে পানির চাহিদা প্রচুর বাড়ছে তবে পরিমাণ বাড়ছে না। ব্যবহারযোগ্য পানির পরিমাণ কমে আসছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ঢাকায় যেখানে ৫০ বছর আগে ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার ২ থেকে ৩ মিটারের মধ্যে ছিল, বর্তমানে সেখানে ৮৬ মিটারে নেমে গেছে। এটি আমাদের জন্য খুবই এলার্মিং। তবে কিছু কিছু এলাকায় বোরো মৌসুমে পানির লেয়ার নিচে নামলেও আবার বৃষ্টির সময়ে পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসে। তবে, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকাতেই পানির লেয়ার শুধু নামছেই, কখনও আর উপরে উঠছে না।’

আনোয়ার জাহিদ আরও বলেন, ‘ঢাকায় পানির লেয়ার সবচেয়ে বেশি নিচে। ঢাকায় বছরে এক থেকে দুই মিটার পর্যন্ত পানির লেয়ার নিচে নেমে যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে যা সেন্টিমিটার হারে নামছে। তবে উদ্বেগের ব্যাপার হলো, ব্যবহারযোগ্য পানি আছে কি না, কত পরিমাণ আছে, এ সব বিষয় দেখার মতো কেউ নেই।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ব্যাপক পরিমাণে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে ঢাকার পাশাপাশি বরেন্দ্র এলাকার অনেক জায়গায় পানির স্তর স্থায়ীভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে। বরেন্দ্র এলাকায় পানি তোলা ছাড়াও অন্যান্য কিছু ইস্যু রয়েছে। সেখানে বৃষ্টিপাত কম হয়। সেক্ষেত্রে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সালের পর থেকে এসব এলাকায় নতুন কোনো টিউবওয়েল বসানোর অনুমতি দিচ্ছে না। ঢাকা ও বরেন্দ্র এলাকার বাইরেও বিভিন্ন নগর এলাকা ও শিল্পাঞ্চল এলাকায় পানির লেয়ার নেমে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রেসি ফোরামের সদস্য ও এনজিও ফোরামের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এসএসও রশিদ, কাজী মনির মোশাররফ, খুলনা ওয়াসার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আবদুল্লাহ, চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রজেক্ট ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম, রাজশাহী ওয়াসার ডেপুটি ম্যানাজার এসএম তুহিনুর আলমসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এসবি/একে

ওয়াটার লেভেল পানির স্তর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর