পিবিআইয়ের এসপির মামলায় বাবুলের বাবা-ভাইয়ের জামিন
৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:২৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ইউটিউবে অসত্য তথ্য প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন পেয়েছেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বাবা ও ভাই। কারাবন্দি বাবুল আক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা মামলাটি দায়ের করেছিলেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলাটি তদন্ত করছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবিরের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন বাবুল আক্তারের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ ও ভাই হাবিবুর রহমান লাবু।
সাইবার ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই আসামি হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। আজ (মঙ্গলবার) তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে তারা সাইবার ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে বিরোধিতা করা হলেও আব্দুল ওয়াদুদকে বয়স বিবেচনায় জামিন দেন আদালত। ওনার বয়স প্রায় ৮০। হুইল চেয়ারে করে ওনাকে আদালতে আনা হয়। অপর আসামি পেশায় আইনজীবী হওয়ায় তিনিও জামিন পেয়েছেন।’
গত বছরের ১৬ অক্টোবর স্ত্রী খুনের আসামি বাবুল আক্তার ও মার্কিন প্রবাসী ইউটিউবার ইলিয়াস হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে নগরীর খুলশী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা। ২৪ নভেম্বর ওই মামলায় কারাবন্দি বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেন আদালত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বাবুল আক্তার, তার ভাই ও বাবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় কথিত সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসাইন বিদেশে পলাতক থাকা অবস্থায় গত ৩ সেপ্টেম্বর তার ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে: খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে ৪২মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন। ওই ভিডিওতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রচার করা হয়।
স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে পিবিআই গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা ও খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু। এদের মধ্যে মুছা ও কালু পলাতক।
অভিযোগপত্রে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই বলেছে, ‘পরকীয়ার ঘটনা জেনে যাওয়ায়’ সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার ‘সোর্সদের দিয়ে’ স্ত্রী মিতুকে ‘খুন করান’ বলে উঠে এসেছে তাদের অনুসন্ধানে। ২০ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে মোট সাক্ষী করা হয়েছে ৯৭ জনকে। তাদের পাঁচজন এ মামলার বর্তমান ও সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পিবিআইয়ের তদন্তে বাদী বাবুল আক্তারই স্ত্রী হত্যার আসামি হয়ে এখন কারাগারে আছেন।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস