‘হে সাকা পুত্র-তুমি পাকিস্তানে চলে যাও’
৬ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:২১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের ভাবাদর্শে বিশ্বাসীদের উত্থান প্রতিরোধের ডাক দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, ‘কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের কুখ্যাত রাজাকার সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে (হুম্মাম কাদের চৌধুরী) বলল-প্রধানমন্ত্রীকে নাকি ক্ষমা চাইতে হবে। হে সাকা পুত্র-তুমি পাকিস্তানে চলে যাও। এ দেশ তোমার না।’
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘নওগাঁর জেলা জজ হাসান মাহমুদুল ইসলাম বলেছেন- মালাউনরা হারলে আমি খুশি হই, অবিশ্বাস্য। প্রশাসন, পুলিশ, নিম্ন আদালত রাজাকার-আলবদরে ভরে গেছে। সরকার অনেককে সরিয়ে দিয়েছে। অন্যদেরও সরাতে হবে। কাজী নজরুল ইসলাম, লালন, রবীন্দ্রনাথের দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো জায়গা হতে পারে না।’
রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না। আইনমন্ত্রী বলেছেন- রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে সরানো হবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি। অপেক্ষায় আছি, বাহাত্তরের সংবিধান পুরোপুরি কায়েম হবে। একটি অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র সৃষ্টির জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ধর্মভিত্তিক দেশ হবে না, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দেশে চলবে না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে আমরা অনেক দূরে চলে গেছি।’
ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মানিক বলেন, ‘২৫ বছর ধরে এদেশে ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতার চর্চা হয়েছে। জিয়া এরশাদ খালেদার কারণে পাকিস্তানপ্রেমী সাম্প্রদায়িকদের জন্ম হয়েছে। তাদের বিনাশ করতে হবে। ধর্মান্ধ, ধর্ম ব্যবসায়ীরা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের কথায় সম্প্রীতির কথা থাকে না, মানবিকতার কথা থাকে না। নারীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। তাদের কথায় থাকে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি-সহিংসতা। সরকার তাদের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা ধর্মান্ধ আর ধর্ম ব্যবসায়ীদের উৎখাত করবেন এটা বিশ্বাস করি।’
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক। সংগঠনের নগর কমিটির সভাপতি পরিমল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিনবোধি ভিক্ষু, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইন্দুনন্দন দত্ত, দক্ষিণ জেলার সভাপতি তাপস হোড় ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার চৌধুরী, নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিতাই প্রসাদ ঘোষ, কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শুভ্র দেব কর এবং কেন্দ্রীয় সদস্য উত্তম কুমার শর্মা।
সারাবাংলা/আরডি/এনইউ