‘বাংলাদেশের অর্থনীতির সূচক ইতিবাচক ও ক্রমবর্ধমান’
৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:০৫
ঢাকা: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, গায়ে হাত দিয়ে যেভাবে বোঝা যায় শরীরে জ্বর আছে কি না, তেমনি অর্থনীতির নানা সূচক ও চারপাশের পরিস্থিতি দেখেও অনেক কিছু বোঝা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির সূচক ইতিবাচক ও ক্রমবর্ধ্মান। এবং তা রুগ্ন নয়।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ব্যাংকিং অ্যালমানাক’র চতুর্থ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ব্যাংকিং অ্যালমানাক’র সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এতে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “দেশের অর্থনীতিতে ‘রিয়েল ইকোনমি’ শব্দটি সংযোজন করতে হবে। অর্থনৈতিক নানা সূচকই শুধু নয়, বাস্তব চিত্রও তুলে ধরতে হবে। যেমন- এই শীতের মধ্যেও বর্তমানে ফুটপাতে শুয়ে থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়তি মনে হচ্ছে। এতে বোঝা যায় করোনা, যুদ্ধ, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদি সংকটে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া মানুষ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এসব চিত্রও বিবেচনায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তথ্য দ্বিধা ও তথ্য বিভ্রম সমস্যা আছে। এটি দূর করতে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার তিনটি স্তম্ভ- তথ্য, নিয়ম ও পলিসি এবং পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।’
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে দরকার সক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা। এছাড়াও পরিকল্পনার চেয়ে কাজ বেশি করা দরকার। যেকোনো সংকটে দেখছি, দেখব করে দীর্ঘসূত্রিতা না বাড়িয়ে দ্রুত ও দৃশ্যমান সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং কার্যকর করতে হবে। এছাড়া নীতি নির্ধারকদেরও তৎপর হতে হবে।’
ব্যাংকিং অ্যালমানাক সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তথ্য সূর্যালোকের মতো। সূর্যের আলো যেমন সকল সংকট দূর করে দেয়, তেমনি তথ্যের প্রবাহও সংকট কাটাতে সাহায্য করে। ব্যাংকিং অ্যালমানাক বাংলাদশের ব্যাংক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য তুলে ধরায় তা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে সূর্যালোকের মতো ভূমিকা রাখবে বলেই আশা করি।’
একটি দেশের রক্তপ্রবাহের মতো হলো ব্যাংক। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাংকের চেয়েও বাজেট নিয়ে আলোচনা বেশি। এছাড়া দেশের মানুষের হাতে টাকা থাকলেও বিনিয়োগে কম আগ্রহী। এসব সংকট দূর করতে ব্যাংকিং অ্যালমানাক ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলোচকরা।
উল্লেখ্য, ব্যাংকিং অ্যালমানাক দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তথ্যসমৃদ্ধ গবেষণাগ্রন্থ। এখানে ৬০টি ব্যাংক ও ৩১টি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক চিত্র ও তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষাবিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকা শিক্ষাবিচিত্রার উদ্যোগে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় ২০১৬ সাল থেকে এই গবেষণা গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়ে আসছে।
ব্যাংকিং অ্যালমানাক’র চতুর্থ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচনে আলোচক হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক মো. নজরুল হুদা ও এ কে এম আফতাব উল ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত লিয়াকত আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়রাম্যান ও আইপিডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকিং অ্যালমানাক’র নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ জিয়াউদ্দিন আহমেদ।
সারাবাংলা/আরএফ/এনএস/পিটিএম