দুদক কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলির ক্ষমতা সচিবের হাতে যাওয়ায় উদ্বেগ
৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:০৯
ঢাকা: অনুসন্ধান ও তদন্তে নিয়োজিত উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলির ক্ষমতা দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের হাত থেকে সরিয়ে সচিবের হাতে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দুর্নীতি রোধে কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) টিআইবি থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এই কার্যাদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন তুলে বলেন, সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী দুদকের নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যান ও তার নেতৃত্বে কমিশনারদের হাতে অর্পিত। এই প্রতিষ্ঠানের মূল ম্যান্ডেট-সংক্রান্ত এই নির্বাহী ক্ষমতা ঢালাওভাবে সচিবের হাতে দেওয়ার এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি কী প্রক্রিয়ায়, কোন যুক্তিতে হলো? কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হওয়ার শঙ্কার বিষয়টি কতটা বিবেচিত হয়েছে? সিদ্ধান্তটি কি কমিশন কর্তৃক সজ্ঞানে গৃহীত, নাকি এতদিন ‘নখদন্তহীন বাঘ’ হিসেবে কথিত এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাকে বাস্তবে রূপান্তর করার এক অশুভ প্রয়াসের ফসল, এমন প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক।
বিবৃতিতে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, এসব প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর পাওয়া জরুরি। বিশেষ করে কমিশন কেন নিজের হাতে থাকা এই ক্ষমতাসহ আরও কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ এখতিয়ার আমলাতন্ত্রের হাতে নিরঙ্কুশভাবে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো? সেটিরও স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক এই কার্যালয় আদেশকে ‘অশুভ’ আখ্যায়িত করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, শুধু উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নই নয়, এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের বলে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ী ও নিয়মিতকরণ, চলতি দায়িত্ব প্রদান, ভাতা ও ছুটি, পেনশন, পিআরএল এবং মামলার সাজার প্রেক্ষিতে পুরস্কার ইত্যাদি সকল ক্ষমতা আমলাতন্ত্রের হাতে অর্পিত হয়েছে। এতে দুদক এখন প্রাক্তন ব্যুরোতে সম্পূর্ণভাবে রূপান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে আর কিছুই বাকি থাকল না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এই আদেশের ছ- অনুচ্ছেদের ৪ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেভাবে ঢালাওভাবে দুদক আইনের ১৬ ধারার আওতাভুক্ত সকল এখতিয়ার বাস্তবায়নের পূর্ণ ক্ষমতা সচিবের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে, তা দুদকের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হওয়ার জনপ্রত্যাশার কফিনের শেষ পেরেক ছাড়া আর কিছুই নয়।
সারাবাংলা/জেআর/আইই