পুলিশের ‘দায়মুক্তির’ পর ডিএনএ পরীক্ষায় শনাক্ত ধর্ষকের যাবজ্জীবন
৮ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:৪৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের অপরাধে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে তিন লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
রায়ে আদালত উল্লেখ করেছেন, ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর বাবা হিসেবে সমাজে পরিচিত হবেন আসামি। এছাড়া আসামির সম্পদ থেকে শিশুটির সমস্ত ব্যয়ভার রাষ্ট্র বহন করবে।
রোববার (০৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের সপ্তম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডিত মো. শাহজাহানের বাড়ি মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার কাটাছড়া ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে। আসামি কারাগারে আছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল আলম নথিপত্র পর্যালোচনার ভিত্তিতে জানান, ২০১৬ সালের ১৫ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শাহজাহানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন আক্রান্ত কিশোরীর মা। এতে অভিযোগ করা হয়, ১৩ বছর বয়সী কিশোরীকে শাহজাহান ধর্ষণ করায় সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে এক ছেলের জন্ম দেয়। কিন্তু শাহজাহান ধর্ষণের দায় এবং পিতৃত্ব অস্বীকার করলে কিশোরীর মা থানায় মামলা করতে যান। থানা মামলা না নেওয়ায় ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন তিনি।
ট্রাইব্যুনাল মামলা গ্রহণ করে জোরালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর বিরুদ্ধে বাদী নারাজি দাখিল করলে ট্রাইব্যুনাল আসামির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
‘গ্রেফতারের পরও আসামি ধর্ষণের দায় এবং পিতৃত্ব অস্বীকার করে। তখন বাদীর বিশেষ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষা হয়। এতে প্রমাণিত হয় যে কিশোরীর সন্তানের বাবা আসামি শাহজাহান। এর ফলে ধর্ষণের বিষয়টিও প্রমাণ হয়ে যায়।’
পিপি আরিফুল আলম জানান, ট্রাইব্যুনাল ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ও ১৩ ধারায় অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর বিচারক এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডিত শাহজাহানকে রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
সারাবাংলা/আরডি/একে