ইসলামী ব্যাংক নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র: ডিবি
৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:১০
ঢাকা: ইসলামি ব্যাংক ও দেশের শিল্প গ্রুপ এস আলম গ্রুপকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সারাদেশে পোস্টার লাগিয়ে জামায়াত শিবিরের একটি চক্র গুজব ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। চক্রটি দেশ-বিদেশে বসে ব্যাংকে টাকা নেই, রিজার্ভ নেই, তাই ব্যাংক থেকে আমানত তুলে ফেলার মতো বিভিন্ন গুজব রটিয়েছে।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ।
এর আগে রোববার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেফতাররা হলেন- মোহাম্মদ নুর উন নবী, আফসার উদ্দিন রোমান, আবু সাঈদ সাজু, স্বাধীন মিয়া ও আব্দুস সালাম।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গ্রেফতার আসামিরা দেশে ও বিদেশে বসে গুজব ছড়িয়েছে। একইসঙ্গে তাদের সহযোগীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি তারা প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করছে। এই চক্রের অনেকেরই নাম পেয়েছি। এমন কি এই চক্রের ইসলামি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক, কর্মরত কর্মকর্তাও রয়েছে। আমরা সবার নাম পেয়েছি দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
বিদেশে অবস্থানরত এই চক্রের বেশ কয়েকজন নাম পাওয়া গেছে। তাদের নিয়ে কাজ চলছে। মামলায় তাদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এই চক্রের অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, জামায়াত শিবিরকর্মী-সমার্থকরা ছাড়া অন্য কোনো দলের সম্পৃক্ততা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
গুজবে কান না দেওয়ার আহবান জানিয়ে মহানগর ডিবি প্রধান বলেন, ‘দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত বৈদিশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার বিষয়টি একটি গুজব। আতংকিত হয়ে ব্যাংক থেকে আমানত উত্তোলন থেকে বিরত থাকতে হবে।’
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দেশের একটি স্বনামধন্য ব্যাংক। ব্যাংকটি এক সময় ১৯৭১ সালে মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধ এর দায়ে ফার্সিতে দণ্ডিত মীর কাশিম আলীসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের দখলে ছিল। ব্যাংকটি পরবর্তীতে স্বাধীনতা বিরোধীদের দখল থেকে মুক্ত হলে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবির চক্র ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে অপপ্রচার চালাতে থাকে। দেশ বিরোধী চক্র সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাংকিং খাত নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।’
এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য দেশের আর্থিক খাতকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। তারা এস. আলম গ্রুপসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানদের নামে ব্যাংকিং সংক্রান্ত মিথ্যা অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে তারা।
ব্যাংকিং খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে বলে অপপ্রচার চালালেও পরবর্তীতে এর প্রেক্ষিতে কোনো ধরণের সাক্ষ্য প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। তারা প্রবাসীদের রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে, ব্যাংকে টাকা নাইসহ নানাবিধ গুজব রটানোর কাজে জড়িত। এই সব গুজবের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময় পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
সারাবাংলা/ইউজে/ইআ