Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দ্রোহ আর সংগ্রামে বোধনের তিন যুগ

স্টাফ করেসপণ্ডেন্ট
৯ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৩২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের গর্ভে জন্ম নেওয়া আবৃত্তি সংগঠন ‘বোধন আবৃত্তি পরিষদ’ তিন যুগ পূর্ণ করেছে। ‘ধ্বনির সম্পদ আছে আমাদের চেতনার গভীরে/যে ধ্বনিতে দীপ্ত হয় চিরচেনা প্রিয় কন্ঠস্বর’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সংগঠনটি বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপন করেছে তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুভেচ্ছা আড্ডা, আবৃত্তি, গানসহ আরও নানা আয়োজন ছিল।

বিজ্ঞাপন

বোধনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বলেন, ‘বোধন আবৃত্তি পরিষদ তিন যুগ পার করল, যা এদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্য একটি বিশেষ বার্তা। তিন যুগ ধরে বোধন তাদের আবৃত্তির মধ্য দিয়ে তাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।’

‘এক সময় যখন আন্দোলন করার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যেত, রাজপথ খালি হয়ে যেত, তখন সংস্কৃতিকর্মীরাই রাজপথে লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছিল। অনেকদিন ধরেই বোধন আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে রাজপথে আছে। যারা মঙ্গলের পথে থাকে, ভয় করে না তারাই রাজপথে থাকে।’

বোধনকে সাংস্কৃতিক আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘বোধনের এমন এক সময়ে জম্ম যখন বঙ্গবন্ধুর নাম শোনা যেত না, জয় বাংলা বলা যেত না। সেই থেকে বোধন হেঁটে চলেছে এক কঠিন পথে। অনেকগুলো উত্তাল পথ তাদের অতিক্রম করতে হয়েছে। একদম মসৃণ ছিল না পথগুলো। শাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তারা কবিতার মাধ্যমে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘দেশে প্রগতিশীল আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, সেটা নস্যাৎ করতে হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো আজ তাদের ভোল পাল্টিয়েছে। তারা সংস্কৃতি চর্চাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তাদের চিহ্নিত করতে বোধনের মতো সংগঠন প্রয়োজন।’

বোধন আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- অধ্যক্ষ রীতা দত্ত, সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার, সংস্কৃতিজন দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, চিকিৎসক বিদ্যুৎ বড়ুয়া, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, যুগ্ম সম্পাদক মাঈনউদ্দিন কোহেল এবং সাংবাদিক ঋত্বিক নয়ন।

স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে ১৯৮৭ সালের ৯ জানুয়ারি তৎকালীন বাম প্রগতিশীল ছাত্র ও সংস্কৃতিকর্মীরা গড়ে তোলেন সম্মিলিত আবৃত্তি সংগঠন ‘বোধন আবৃত্তি পরিষদ’। ওই সময় এরশাদবিরোধী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে সরকারের রোষানলেও পড়তে হয়েছিল সংগঠনটিকে।

চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সংস্কৃতিকর্মীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মুখে বোধন কর্মীদের আবৃত্তি পরিবেশন করেই মঞ্চ থেকে পালিয়ে যেতে হতো। ১৯৯৩ সালের ১০ অক্টোবর দেশের প্রথম আবৃত্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘বোধন আবৃত্তি স্কুল’ যাত্রা করে।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

বোধন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর