ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১৯ পয়সা বাড়ল
১২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:০৩
ঢাকা: ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ১৯ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ( ১২ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ১ জানুয়ারি থেকে বিদ্যুতের নতুন দাম কার্যকর হবে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব এস এম মাজাহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারের নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।এখন থেকে প্রতিমাসে বিদ্যুতের খুচরা দাম সমন্বয় করা হবে।
এর আগে, গত রোববার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে সঞ্চালন সংস্থা ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবের ওপরে বিইআরসি আয়োজিত গণশুনানিতে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট ১ টাকা ২১ পয়সা বাড়ানোর প্রস্থাব করেছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত এ সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি। এরপর সে দামের ওপর পর্যালোচনা করে বৃহস্পতিবার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়।
বর্তমানে বিদ্যুতের খুচরা দাম প্রতি ইউনিট ৭ টাকা ২ পয়সা। নতুন দাম নির্ধারণের ফলে এখন ৭ টাকা ২১ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।
গেল বছরের ২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়েছিল বিইআরসি। নতুন দাম ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। ওই বাড়তি দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর আবেদন করে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা। তাদের আবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের পর খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি। গত দুই বছরে বিভিন্ন খাতে খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া এখন পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ানোর কারণে একটা ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এই ঘাটতি পূরণে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির বিকল্প নেই। পাইকারি পর্যায়ে যে দাম বাড়ানো হয়েছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে বলে আবেদনে যুক্তি তুলে ধরা হয়। দাম বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের ওপরে চাপ কতটা পড়তে পারে তারও ব্যাখ্যা তুরে ধরেছে বিতরণ সংস্থাগুলো। আবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাহক বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে তাদের ওপরে বাড়তি খরচের চাপ পড়বে না।
গত দফায় পাইকারি দাম বৃদ্ধির ঘোষণার দুই দিন পরেই ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর আবেদন করে বিদ্যুৎ উয়ন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এর এক সপ্তাহের মধ্যে অন্য পাঁচ বিতরণ কোম্পানিও দাম বৃদ্ধির আবেদন করে। এ সব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে দেয় বিইআরসি। যে কমিটি বিতরণ সংস্থাগুলোর আবেদন যাচাই- বাছাই করে গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিটে বিদ্যুতের দাম ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করে। যার ওপরে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সবশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। সে সময় পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ভোক্তা পর্যায়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়।
উল্লেখ্য, দেশের সরকারি বেসরকারি পর্যায়ের সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত দামে বিদ্যুৎ কিনে নেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এরপর তারা উৎপাদন খরচের চেয়ে কিছুটা কম দামে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কাছে বিক্রি করে। ঘাটতি মেটাতে পিডিবি সরকারের কাছ থেকে এ খাতে ভর্তুকি নেয়। তবে বিতরণ সংস্থাগুলো সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের ভর্তুকি পায় না।
সারাবাংলা/একে