ওড়িশি বিদ্যায়তনের ২৩ বছরে বর্ণিল নৃত্যমেলা
১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:২৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বর্ণিল আয়োজনে ২৩ বছরের যাত্রা শুরু করেছে দেশে শাস্ত্রীয় নৃত্যশৈলী ‘ওড়িশি’ চর্চার একমাত্র বিদ্যায়তন ‘ওড়িশি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট সেন্টার’। আয়োজনের অংশ হিসেবে দুইদিনের নৃত্যমেলার উদ্বোধনীতে সম্মিলন ঘটেছিল বাংলাদেশ-ভারতের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ-শিল্পীদের।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটের উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে বিদ্যায়তনের পরিচালক ওড়িশি নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তীর পরিকল্পনায় সম্মিলিত নৃত্যের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় নৃত্যমেলার। বিদ্যায়তনের আগমনী, প্রজাপতি, হাসি-খুশি, শাপলা ও সূর্যমুখী বিভাগের প্রায় ২০০ শিশুশিল্পী এতে অংশ নেন।
এরপর প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পবিত্র সরকার বলেন, ‘গান-নাচের মধ্যে আমরা আনন্দ পাই, আমরা বেঁচে থাকার রসদ পাই। আমাদের জীবনটা আমরা বিভিন্নভাবে যাপন করে থাকি। গান করি, নাচ করি, হাঁটি, বাজার করি, ঝগড়া করি, মারামারি করি। এক জীবনের মধ্যে অনেকগুলো কাজ করে থাকি। ভালো করছি কী খারাপ করছি সেটা আমাদের ওপরই নির্ভর করে।’
‘মানুষ ২৫ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে এসেছে। কিন্তু তারা হাজার বছর ধরে অনেক কিছু তৈরি করেছে যাকে বলে শিল্প। শিল্প সুন্দর যা ভাষায় তৈরি হয়, কবিতায় তৈরি হয়, গানে, ছবিতে, নাচে তৈরিরী হয়। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এ শিল্প তৈরি করেছে তার মধ্যে থেকেই আমরা সত্যকে পেয়েছি। আমরা পেয়েছি সত্য আর সুন্দরকে। সুতরাং সত্য আর সুন্দর টিকে থাকবে ততক্ষণ যতক্ষণ শিল্প থাকবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ‘ওড়িশি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট সেন্টার’র সভাপতি সমাজবিজ্ঞানী অনুপম সেন বলেন, ‘এই পৃথিবীটা মানুষ গড়েছে। একটি প্রাকৃতিক পৃথিবী বহুদিন ধরেই টিকে আছে। কিন্তু সেটিকে পৃথিবীতে রূপ দিয়েছে মানুষ। কীভাবে দিয়েছে? প্রকৃতি থেকে শিখেই দিয়েছে। প্রকৃতির পরিবর্তন এ বিশ্ব তৈরি করেছে। তেমনিভাবে নাচ কিংবা গান ; অন্যান্য শিল্প সবই মানুষ প্রকৃতি থেকে পেয়ে নিজের মতো করে তৈরি করেছে। শিল্পের মধ্য দিয়ে মানুষ পৃথিবীর পরিবর্তনও এনেছে। আর আজকের কোমলমতি শিশুরা নাচের মাধ্যমে, গানের মাধ্যমে সমাজকে পরিবর্তন করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
নৃত্যমেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক নিবিড় দাশগুপ্তা’র স্বাগত বক্তব্যের পর আবৃত্তিশিল্পী কঙ্কন দাশের সঞ্চালনায় ভারতের ত্রিপুরার বাচিক ও নৃত্যশিল্পী মণীষা পাল চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন। এরপর ওড়িশি নৃত্যশিল্পীরা আরও কয়েকটি নৃত্য পরিবেশন করেন।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে পবিত্র সরকারকে ‘আজীবন সম্মাননা’ দেওয়া হবে। এছাড়া প্রবন্ধ ও গবেষণার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ এবং ত্রিপুরার বাচিক ও নৃত্যশিল্পী মণীষা পাল চৌধুরীকে সম্মাননা দেওয়া হবে।
সারাবাংলা/আইসি/আরডি/একে