লাইসেন্স কাঠের ব্যবসার, ভেতরে কনটেইনার ডিপো
১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:৩৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর কালুরঘাটে কাঠের ব্যবসার লাইসেন্সে কনটেইনার ডিপোর ব্যবসা পরিচালনা করছে ‘হাজী সাবের কন্টেইনার ডিপো’। এই অপরাধে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (১৫ জানুয়ারী) দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত অভিযান পরিচালনা করে এ জরিমানা করেন।
জেলা প্রশাসন জানায়, ‘হাজী সাবের টিম্বার কোম্পানি লিমিটে’ নামে প্রতিষ্ঠানটির টিম্বার কোম্পানি হিসাবে লাইসেন্স থাকলেও পরিদর্শনে দেখা যায় এটি একটি কনটেইনার ডিপো। এর ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২১ সালের ২১ জুন শেষ হয়। পরে ২০২২ সালের ৭ জুন একসঙ্গে ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ দুই বছরের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে ডিপো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং সেফটি প্ল্যান না থাকায় ফায়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্সের নবায়ন স্থগিত রাখে।
জেলা প্রশাসন রোববার ডিপোর ভেতরে গিয়ে দেখতে পায় একটি খালি কনটেইনারে অবৈধভাবে প্রায় ২০০ ড্রাম ডিজেল মজুত করা হয়েছে। ড্রামগুলোর বেশ কয়েকটির মুখ খোলা এবং পাশেই পড়ে রয়েছে প্রচুর সিগারেটের ছাই ও অবশিষ্টাংশ। এছাড়া ডিপোতে নেই পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা। ১৪ বছর ডিপো পরিচালনা করলেও ফায়ার সেফটি প্ল্যান অনুমোদনের জন্য তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ২০ একরের এই ডিপোতে প্রায় ১৫০০ কনটেইনার থাকার কথা থাকলেও সেখানে ছিল মাত্র ৩৫টি, যার বেশিরভাগই অকেজো। ডিপোতে ১০০ জন বেতনভুক্ত কর্মচারী থাকলেও ফায়ারের প্রশিক্ষণ রয়েছে মাত্র চারজনের। আবার তাদের কেউই ফায়ার এক্সটিংগুইশার ব্যবহার করতে জানেন না।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত সারাবংলাকে বলেন, ‘আমরা দুপুরে গিয়ে অভিযান চালালে তারা আমাদের কনটেইনার ডিপোর লাইসেন্স দেখাতে পারেনি। তবে কাস্টমস কতৃপক্ষের লাইসেন্স দেখিয়েছিল। কিন্তু কনটেইনার ডিপো পরিচালনা করতে গেলে বন্দর থেকে ছাড়পত্র লাগে। সেটা তারা দেখাতে পারেননি। প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স ও ফায়ার লাইসেন্সের নামের সঙ্গে ব্যবসার ধরনের কোন মিল নেই। এছাড়া পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং সেফটি প্লানও প্রতিষ্ঠানটির ছিল না। এসব অনিয়মের দায়ে ডিপোর এজিএম মো. এনামুল হককে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং আগামী ১ মাসের মধ্যে যাবতীয় ত্রুটি সংশোধনের আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জনাব আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘যাদের ফায়ার লাইসেন্স নাই বা লাইসেন্স থাকলেও ত্রুটি বিচ্যুতির কারণে মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে তাদের কোনো ছাড় নেই। বিএম ডিপোর মতো ঘটনা আর যেন এই চট্টগ্রামে না ঘটে সেজন্য জেলা প্রশাসনের এই অভিযান চলমান থাকবে।’
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম