সোমবারও সতর্ক থাকবে আওয়ামী লীগ

ঢাকা: ১৬ জানুয়ারি বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের দিন ঢাকায় সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে কর্মসূচি দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে অবস্থান ও সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। আর ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ দুপুর ৩টায় ভাটারার ১০০ ফুট সড়কে ‘শান্তি’ সমাবেশ করবে।

তবে আওয়ামী লীগ বিএনপির কর্মসূচির দিন রাজধানীতে তাদের সমাবেশকে পাল্টা কর্মসূচি হিসাবে মানতে নারাজ। ক্ষমতাসীন দলটির দাবি, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সতর্ক অবস্থানে থাকবে তারা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা বলছেন, দলের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, রাজধানী ঢাকায় বিএনপির যেকোনো কর্মসূচির দিনে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে শক্তির মহড়ায় সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে।

৩০ ডিসেম্বর ও ১১ জানুয়ারি বিএনপির কর্মসূচির দিন ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো পাল্টা কর্মসূচি পালন করে। এবারও একইভাবে ১৬ জানুয়ারি (আগামীকাল সোমবার) যুবলীগ ফার্মগেটে সমাবেশ করবে।আর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শাহবাগে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রজন্মের স্বপ্ন, স্মার্ট বাংলাদেশ ছাত্রসমাজের রায় শীর্ষক ছাত্র সমাবেশ করবে।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির যৌথ সভায় চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন কর্মসূচি করতে কোনো বাধা নেই। তবে তারা সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করলে সরকার কঠোরভাবে দমন করার বার্তা দেন দলটির নেতাদের। যৌথ সভার পর বিকেলে দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর নেতারা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটি এবং সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের দলীয় মেয়রদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়। মূলত বিএনপির কর্মসূচির দিন করণীয় ঠিক করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল বলেও জানা গেছে।

বৈঠকের শুরুতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘একটা ওয়ান-ইলেভেন হয়েছে, আরেকটা ওয়ান-ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি করে বেনিফিশিয়ারি (সুবিধাভোগী) হবে—এই লক্ষ্যে তারা অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে।’

আগামী নির্বাচনে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা নেই জেনে দলটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে বলেও সভায় অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করতে নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরকার হটানো। এ জন্য দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা সরকার পতনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে।’

দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই আমাদের দেখতে হবে। আন্দোলনের নামে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে তারা (বিএনপি) জনজীবনে দুর্ভোগ ডেকে আনবে, রাস্তা অবরোধ করে বিশৃঙ্খলা ডেকে আনবে—এই অবস্থায় আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমাদের নেতা-কর্মীদের আরও সুদৃঢ় করতে হবে। আরও শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা প্রতিহত করতে হবে।’

এর আগে ১১ জানুয়ারি বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগের যে দুটি সমাবেশ হয়েছিল, সেগুলোতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি তুলনামূলক হয়নি বলে শীর্ষ নেতারা মহানগর নেতাদের অবহিত করেন। একারণে জন্য ১৬ জানুয়ারির কর্মসূচিতে বড় ধরনের জমায়েত করে রাজপথে কর্মসূচির কৌশলে শক্তির মহড়ায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা। এদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ হবে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে স্বল্প দূরত্বে।

তাই সে সমাবেশে যেন জনসমাগম বেশি হয় সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এবং ভাটারার দুটি সমাবেশেই প্রধান অতিথি হিসাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

আওয়ামী লীগ রাজনীতি সতর্ক অবস্থান সমাবেশ কমসূচি