অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান প্রক্রিয়া
১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:০৬
ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেছে, দেশের যেখানেই অনিবন্ধিত ও অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক আছে সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার। এসব অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্দেশনায় সবাই কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনো অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মানুষ প্রতারিত যেন না হয় সেজন্যেই কাজ করে যাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরে নিজ কক্ষে সারাবাংলাকে এ সব কথা বলেন অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর।
তিনি বলেন, ‘মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম স্বাস্থ্য। সেই স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে যেন কেউ হয়রানির শিকার না হন সেটা নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সরকারি বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে আমরা ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি সার্ভিস (ওসেক) সেবা চালু করেছি। এসব স্থানে মানুষ দ্রুততার সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে দিন রাত ২৪ ঘণ্টাই চিকিৎসা নিতে পারবেন। রোগীর জরুরি প্রয়োজনে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা এখানে রয়েছে। আর তাই রোগীকে অন্য কোথাও যেতে হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মান উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আর অন্যদিকে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও যেন মানুষ মানসম্মত চিকিৎসা পায় সে বিষয়েও আমরা কাজ করছি। এক্ষেত্রে সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য আমরা গত বছরই আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। এরপর থেকে অভিযান শুরু করা হয়। যা এখনও চলমান আছে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ‘শুধুমাত্র বেসরকারি এইসব হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনই সব কিছু নয়, অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো ঠিক আছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেসব বিষয় নিশ্চিতেও কাজ করছে অধিদফতর।’
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র অভিযানেই আমাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকছে না। আমরা বেসরকারি হাসপাতালের ফি নির্ধারণ করা নিয়েও কাজ করছি। এক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ক্যাটেগরাইজড করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দিচ্ছি। মান অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করার কথাও ভাবা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেখা গেল একটা হাসপাতালে সি-সেকশন বা সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে, কিন্তু সেখানে হৃদরোগীদের জন্য কোনো সুবিধা নেই। তারপরও সেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এমনটা তো হতে পারে না। এক্ষেত্রে হাসপাতালগুলোকে চিকিৎসা সেবার মান অনুযায়ী শ্রেণিভুক্তকরণ করা হলেও মানুষের চিকিৎসা গ্রহণে সুবিধা হবে। এর পাশাপাশি যদি সঠিক ফি নির্ধারণ করে দেওয়া যায় তবে দেশের মানুষেরই উপকার হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতর তাই এসব বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৬ মে থেকে অনুমোদনহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৫০০টিরও অধিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই অভিযান বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি দলের একাধিক মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন নেতা এর পক্ষে অবস্থান নেন। এ বিষয়ে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে, তা পর্যায়ক্রমে তৃণমূলে যাবে। অভিযান চলবে অনিয়মের আবর্তে থাকা অন্যান্য খাতেও।’
এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম-দুর্নীতিরোধে সরকারের কর্মসূচির অংশ হিসেবে হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালানো হয়। অনিয়মের সঙ্গে যেই যুক্ত হোক, দল-মত নির্বিশেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।’
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম