Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদিশার কাছ থেকে এরিককে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৫৪

ঢাকা: বিদিশা সিদ্দিকের হাত থেকে এরশাদপুত্র শাহতা জারাব এরশাদ এরিককে ‘উদ্ধারের’ জন্য পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশা সিদ্দিককে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি এ আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়। এসময় ট্রাস্টের সদস্য সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের চাচাতো ভাই শামসু জামান মুকুল, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গির, আ্যাডভোকেট কাজী রোবায়েত হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট পার্কে বিদিশার প্রবেশের সময় এরিকের বয়স ছিল ১৮ বছর। বর্তমানে তার বয়স ২২ বছর। এরিক শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও তিনি মানসিকভাবে পরিপূর্ণ সুস্থ এবং সামর্থ্যবান মানুষ। সে কারণে তিনি নিজেই এখন আর বিদিশা সিদ্দিক গংদের নিয়ন্ত্রণে থাকতে রাজি নন। এ ধরনের নানা তথ্য এরইমধ্যে অডিও-ভিডিওতে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে ট্রাস্টের বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও গেল ২৭ অক্টোবর এরশাদপূত্র শাহতা জারাব এরশাদ এরিককে ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক বিদেশ ভ্রমণে নেওয়া হয় বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘এর আগে বিদিশা ও তার আর্শিবাদপুষ্ট কতিপয় লোকজনের খপ্পর থেকে মুক্তি পেতে আবেদন জানিয়ে এরিকের টেলিফোন আলাপ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এরপরই ট্রাস্টের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পার্কের দূরত্ব তৈরি হয়। বিদিশার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে সরবরাহ করা হয় বিভ্রান্তমূলক তথ্য। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দেওয়া হয় নানা ধরনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ট্রাস্টের বিধিবিধান না মেনে সৌদি সফরের দিন (২৭ অক্টোবর) এরিক এরশাদকে দিয়ে অনৈতিকভাবে ট্রাস্টের নতুন চেয়ারম্যান ও কয়েকজন সদস্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অনৈতিকভাবে এরিককে দিয়ে আমি কাজী মামুনূর রশীদসহ অন্য সদস্যদের অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেয় বিদিশা গংরা। এরপর সৌদি ফেরত এরিক এরশাদের খোঁজখবর নিতে গত ৫ নভেম্বর ট্রাস্ট সদস্যরা প্রেসিডেন্ট পার্কে গেলে বিদিশা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এরপর থেকেই ট্রাস্টের পক্ষে এরিকের জন্য মাসিক খরচ সরবরাহ ব্যাহত হতে থাকে। এমন কী ট্রাস্টের নিয়োগকৃত বেতনভুক্ত স্টাফদের প্রেসিডেন্ট পার্কে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এ অবস্থায় এরিকের ভরণপোষণে অচলাবস্থা দেখা দেয়। তার নিরাপত্তায়ও দেখা অনিশ্চয়তা। এরইমধ্যে সম্প্রতি হঠাৎ করে মাসিক খরচ পরিশোধে ব্যবস্থা নিতে ট্রাস্টের চেয়ারম্যানসহ সদস্যদের উকিল নোটিশ দেওয়া হয়। এসবের পেছনে প্রেসিডেন্ট পার্কে অনুপ্রবেশকারী বিদিশা সিদ্দিক ও তার আর্শিবাদপুষ্ট লোকজনের কি হীন উদ্দেশ্য রয়েছে, তা তদন্তের আহ্বান করছি।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাস্টের ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি তার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তান শাহতা জারাব এরশাদ এরিকের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজ হাতে গড়ে তোলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট। তিনি নিজে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হন। সে সময়ে ট্রাস্ট পরিচালনায় তিনজন সাধারণ সদস্য করে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। শাহতা জারাব এরশাদ এরিককে ট্রাস্টের সুবিধাভোগী সদস্য করা হয়। সে সময় যে তিনজন সাধারণ সদস্য করা হয়, তারা হলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর খালেদ আখতার, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও শামসুজ্জামান মুকুল।

সংবাদ সম্মেলনে কাজী মামুনূর রশীদ বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন এক নম্বর সদস্য মেজর খালেদ। এসময় ট্রাস্টের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিলে অবশিষ্ট সদস্যবৃন্দের সম্মতিক্রমে ট্রাস্টি কার্যবিবরণীর মাধ্যমে আরও তিনজনকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এদের একজন হলাম আমি। অন্যরা হলেন- ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর ও অ্যাড. কাজী রুবায়েত হাসান। পরবর্তীতে মেজর খালেদ ও জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যু হলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ট্রাস্ট কর্মকাণ্ড (ব্যাংকিং) পরিচালনায় জটিলতা দেখা দিলে সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করি। এরপর থেকে ট্রাস্টভুক্ত স্থাবর অস্থাবর সম্পদ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা হয়। সেইসঙ্গে ট্রাস্টের একমাত্র সুবিধাভোগী এরশাদপুত্র শাহতা জারাব এরশাদ এরিকের মাসিক খরচ কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সরবরাহ করে আসছিল ট্রাস্ট।

তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতে ট্রাস্টভুক্ত সম্পদ বুঝে নিতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ট্রাস্টভুক্ত রংপুরের অচল কোল্ডস্টোরেজ সচল করতে প্রায় ৮০ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকার গুলশানে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত একটি বাড়িকে ভাড়াযোগ্য করে তুলতে অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে। তারপরও এরিকের খরচ সরবরাহে কোনো ধরনের ব্যতয় ঘটেনি।

সংবাদ সম্মেলনে ভিডিও ফুটেজও প্রদর্শন করা হয়।

https://www.facebook.com/Sarabangla.net/videos/866279401296927

সারাবাংলা/এএইচএইচ/আইই

এরিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর