Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:২৮

ঢাকা: তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে ভর্তুকির চাপ সামাল দিতে আরেক দফা বাড়ানো হলো গ্যাসের দাম। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) শিল্পখাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জ্বালানি বিভাগ।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়লেও আবাসিকের এবং কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাসের (সিএনজি) ও চা শিল্পে দাম বাড়ানো হয়নি। নতুন নির্ধারিত এই দাম আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হবে।

বিজ্ঞাপন

জ্বালানি বিভাগের উপ-সচিব শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিদ্যুৎ খাতে সরবরাহ করা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৫ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শিল্পখাতে গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা, যা আগে ছিল ১৬ টাকা।

ক্যাপটিভ পাওয়ার ( শিল্প কারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন) খাতে গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিট ঘনমিটারে ১৬ টাকা থেকে ৩০ টাকা, বড় শিল্পে ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে ৩০ টাকা, মাঝারি শিল্পে ১১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে ৩০ টাকা এবং ক্ষুদ্র শিল্পে ১০ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়ি ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাণিজ্যিক গ্যাস সংযোজনের ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটারে ২৬ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে আবাসিক, চা শিল্প ও সিএনজি খাতে গ্যাসের দাম আগের মতোই থাকছে। বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকদের এক চুলার দাম ৯৯০ টাকা এবং দুই চুলার দাম ১ হাজার ৮০ টাকা। অন্যদিকে সিএনজিতে প্রতি ঘনমিটারে ৪৩ টাকা এবং চা শিল্পের গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ১১ টাকা ৯৩ পয়সাই রয়েছে। সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার আগের দাম ১৬ টাকাই বহাল রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, পাঁচ দিন আগে এক নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ায় সরকার। সূত্রে জানা যায়, গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বিতরণ খরচে সমন্বয় চেয়ে সম্প্রতি তিতাসসহ বিতরণ সংস্থাগুলো বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বড় ধরনের ধাক্কা আসবে শিল্প খাত, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে ভোক্তা পর্যায়েও। বর্তমানে দিনে মোট ১ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। বাকি ৮ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে মেটানো হতো। কিন্তু বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আপাতত এলএনজি আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানির এই বাড়তি দামের কারণে এলএনজিতে সবচেয়ে বেশি লোকসান গুণতে হচ্ছে সরকারকে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরে এলএনজির জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির দরকার হবে। এখন খোলাবাজার থেকে প্রতি এমএস বিটিইউ এলএনজি ৩২ থেকে ৩৬ ডলারের নিচে কেনা সম্ভব হচ্ছে না। বাড়তি দামে তিনটি এলএনজি কার্গো কেনা হচ্ছে। আর এতে সরকারের দুই হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। এর বাইরে জ্বালানি তেলেও বিপুল লোকসান গুণতে হচ্ছে সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়িয়ে আমদানিকৃত জ্বালানির ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছে সরকার।

সারাবাংলা/জেআর/আইই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর