সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা: ঝুলে গেছে বিস্ফোরক মামলা
২০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:২৬
ঢাকা: ২২ বছর আগের এই দিনে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি রাজধানীর পল্টন ময়দানে এই হামলায় ৫ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়। দীর্ঘ ১৯ বছর পর হত্যা মামলার কার্যক্রম শেষ হলেও বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার এখনও ঝুলে রয়েছে। দীর্ঘদিন সাক্ষী আদালতে হাজির না হওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মামলার বিচার কবে নাগাদ শেষ হবে তা বলতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষও।
২০২০ সালে হত্যা মামলার রায়ে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন তৎকালীন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম। সম্প্রতি মামলাটি সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২১ এ বদলির আদেশ হয়েছে। এরপর থেকে ওই আদালতেই চলবে মামলার বিচার।
আদালত সূত্রে জানায়, বিস্ফোরক আইনের মামলায় এখন পর্যন্ত ১০৬ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৩০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সালাহউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনায় করা বিস্ফোরক আইনের মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি হয়ে গেছে। আমরা সাক্ষীদের আদালতে হাজির করতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু সাক্ষীরা আসেনি। আমাদের চেষ্টার ঘাটতি ছিল না। তবে এই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় রায় হয়েছে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী ঈদী আমিন বলেন, ‘বিস্ফোরক আইনের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে পারে না। যে কারণে মামলার বিচারে কোনো অগ্রগতি নেই।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, রাজধানীর পল্টন ময়দানে ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি সিপিবির সমাবেশে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় ৫ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হন। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছিল।
পরে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও ২০০৫ সালের আগস্টে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা হয়। এসব ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়ার পর ২০০৫ সালে মামলাটি আবার পুনঃতদন্তের আদেশ দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর মামলাটি পুনঃতদন্তের পর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মৃণাল কান্তি সাহা।
মামলার আসামিরা হলেন- মুফতি আব্দুল হান্নান, মুফতি মাঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মো. মশিউর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুত্তাকিন, আমিনুল মুরসালিন, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিরাজ ও নুর ইসলাম। আসামিদের মধ্যে জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের অন্য একটি মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আসামিদের মধ্যে শওকত ওসমান, হান্নান সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ও মাইনউদ্দিন কারাগারে আছেন। অপর ৮ আসামি পলাতক।
২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হত্যা মামলার রায়ে মুফতি মাঈন উদ্দিন শেখ, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুত্তাকিন, আমিনুল মুরসালিন, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান ও নুর ইসলামকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রফিকুল ইসলাম মিরাজ ও মশিউর রহমানকে খালাস দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/এআই/এমও