Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কুমিল্লা থেকে ‘ঘর ছেড়ে’ খালি কনটেইনারে চড়ে মালয়েশিয়ায়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:২৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনারে করে মালয়েশিয়ায় চলে যাওয়া কিশোরের পরিচয় ও ঠিকানা মিলেছে। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোর ‘অভ্যাসবশত’ ঘর থেকে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিল। দুই মাস আটদিন পর তার খোঁজ মেলে মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে খালি কনটেইনারের ভেতর।

গণমাধ্যমে প্রচারিত কয়েকটি ছবি দেখে পরিবার তাকে শনাক্ত করেছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় পাওয়া ছেলেটির বাড়ি কুমিল্লায় জানতে পেরে স্থানীয় ওসিকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি ছবি দেখিয়ে মা-বাবার কাছ থেকে ওই ছেলে তাদের সন্তান বলে নিশ্চিত হয়েছেন।’

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মো. রাতুল ইসলাম ফাহিম (১৫) নামের এই কিশোর কুমিল্লার জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের মো. ওমর ফারুক ও নিপু বেগমের ছেলে। ১৬ বছর আগে ওমর ফারুক চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ নিয়েছিলেন। চার বছর আগে পরিবার নিয়ে গ্রামে চলে যান। এখন কৃষিকাজ করেন। তিন ছেলের মধ্যে রাতুল সবার বড়।

গত ১৭ জানুয়ারি রাতে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এমভি ইন্টিগ্রা জাহাজ থেকে রাতুলকে উদ্ধার করে মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষ। জাহাজটির বাংলাদেশের প্রতিনিধি কন্টিনেন্টাল ট্রেডার্স (বিডি) লিমিটেড। গত ১২ জানুয়ারি ১৩৩৭ টিইইউএস কনটেইনার নিয়ে এমভি ইন্টিগ্রা জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা দেয়। ১৬ জানুয়ারি সেটি কেলাং বন্দরে পৌঁছায়। খালি কনটেইনারের ভেতর থেকে ‘গোঙানির’ শব্দ শুনে কিশোরকে উদ্ধার করে কেলাংয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফেসবুকে ছেলেটির কয়েকটা ছবি পেয়েছিলাম। সেই ছবি নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাবা-মা দু’জনই ছবি দেখে এটা তাদের সন্তান বলে নিশ্চিত করেছেন। রাতুল ছেলেটির পায়ে সমস্যা আছে। মানসিকভাবেও সমস্যা আছে। দুই মাস আটদিন আগে সে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বাবা-মা জানিয়েছে, মাঝে মাঝেই সে এভাবে বেরিয়ে যেত, আবার কয়েকদিন পর ফিরে আসত। এবারও তারা ভেবেছিল ফিরে আসবে। এজন্য নিখোঁজের ঘটনায় তারা কোনো জিডিও থানায় করেনি।’

রাতুলের চাচা আজগর মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাড়ি থেকে আগেও রাতুল কয়েকবার কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে গিয়েছিল। আবার ফিরেও এসেছিল। এবারও ফিরে আসবে ভেবে আমরা থানায় যাইনি।’

রাতুলের মা নিপু বেগম ছেলেকে ফিরে পেতে সরকার ও প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। ছেলেটার খোঁজ যখন পাওয়া গেছে, আমাদের কাছে যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়।’

ওসি শফিউল আলম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এর বেশি কিছু আমাদের করার নেই।’

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

রাতুল ইসলাম ফাহিম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর