।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে দেড় বছর বয়সী এক শিশুর মুখমণ্ডলের মাংস ইঁদুর কিংবা বেজিতে খেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন ।
গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের নর্দ্দা এলাকার একটি বাসায় সোহান হাওলাদার নামের দেড় বছরের এক শিশুর শরীরে গরম ডাল পড়ে ঝলসে যায়। পরে দগ্ধ অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। শিশুটির শরীরের ১৬ শতাংশ পুড়ে যায়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (৩ মে) সকাল ৯টার দিকে শিশুটি মারা যায়। শিশুটিকে নিয়ে রাখা হয় জরুরি বিভাগের মর্গের হিমঘরে। শিশুটির বাবা সোহাগ হাওলাদার বাচ্চার মৃতদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রেখে চলে যান গুলশান থানায়।
সেখান থেকে গুলশান থানা পুলিশের এক সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালে আসেন শিশুটির বাবা। পুলিশের সহায়তায় মর্গের ফ্রিজ থেকে শিশুটিকে বের করা মাত্রই সবাই অবাক হয়ে যান। রেখে গেলেন অক্ষত অবস্থায়। কিন্তু তারা দেখতে পান শিশুটির বামগালে কানের নিচের মাংস ওঠানো।
শিশুটির বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ২৬ এপ্রিল দগ্ধ অবস্থায় একমাত্র ছেলেকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করি। কিন্তু বাঁচাতে পারলাম না। আল্লাহ আমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাকে অক্ষত অবস্থায় নিতে পারলাম না। আমার ছেলের লাশের বাম গালে মাংস নেই। এটা কীভাবে সম্ভব। ওর মাকে এখন কী জবাব দেব?’
ঢামেক জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান জানান, মর্গের ফ্রিজ ভালো আছে। শিশুটিকে কিসে ক্ষত করল? বিষয়টি দেখা হচ্ছে। ফ্রিজের পেছনে একটা ভাঙা আছে। সেখান দিয়ে হয়ত কোনো ইঁদুর কিংবা বেজি ঢুকেছিল।
গুলশান থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আলম বলেন, ‘শিশুটির মুখমণ্ডলের এ অবস্থা দেখে আমরাও অবাক হয়েছি। বামগালের মাংস সম্ভবত ইঁদুরে খেয়েছে।’ অব্যবস্থাপনার কারণে এমনটি হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন সংবাদ পেয়ে জরুরি বিভাগের হিমাগারে ছুটে যান।
তিনি শিশুটির স্বজনদের সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ‘বিষয়টি খুব বেদনাদায়ক, কেন শিশুটির গালে ক্ষত হলো! যারা এ বিভাগের হিমাগারের দায়িত্বে আছেন তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ভবিষ্যতে যেন এমন দুঃখজনক ঘটনা আর না ঘটে।’
সারাবাংলা/এসএসআর/একে