।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকাঃ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান তার আচরণের জন্য সাংবাদিকদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার ( ৩ মে) দুদক কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক এক ভদ্রমহিলার সঙ্গে আমার যে কনভারসেশন হয়েছে, এজন্য আমি স্যরি। এজন্য আমি দুঃখপ্রকাশ করছি।’
এর আগে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা সাত ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের উপপরিচালক ও মিজানেরে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এক নারী সংবাদ পাঠিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার প্রসঙ্গে ডিআইজি মিজান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি বলব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমার বিরুদ্ধে ইনকোয়ারি আছে। সুতরাং উনারাই ভালো বলতে পারবেন, কতটুকু প্রমাণিত হয়েছে, আর কতটুকু প্রমাণিত হয়নি।’
দুদকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে, আমার ট্যাক্স ফাইলের বাইরে আমার কোনো সম্পদ নেই। বাকিটুকু দুদক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।’
আত্মীয় স্বজনের নামে অনেক সম্পদ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি মিজান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কোথায়, কী সম্পদ রয়েছে, কিংবা আত্মীয় স্বজনের নামে কোথায় কী রয়েছে, তা আমার ট্যাক্স ফাইলে আছে।’
দুদক সূত্র জানায়, এক নারীকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে আলোচিত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান করতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারিকে দায়িত্ব দেয় কমিশন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ এপ্রিল ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারির সই করা নোটিশে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে ৩ মে বৃহস্পতিবার সকালে দুদক কার্যালয়ে তলব করে চিঠি পাঠানো হয়। ওই নোটিশের প্রেক্ষিতে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনি হাজির হলে বৃহস্পতিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দুদক সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজানুর রহমান পুলিশের উচ্চ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদবির, নিয়োগ, বদলিসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব প্রমাণিত হওয়ায় দুদক তা আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
অনুসন্ধানে মিজানের নামে-বেনামে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি, ফ্ল্যাট ও প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও তার একাধিক ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে বলে দুদক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও এক নারীকে জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া এক নারী সাংবাদিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে ডিএমপির তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার পদ থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর