সারদায় প্রধানমন্ত্রী, জনসভা ঘিরে রাজশাহীতে জনস্রোত
২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:২৭
ঢাকা: রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা ও সারদায় পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজশাহীতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে তিনি রাজশাহীর সারদায় পৌঁছান।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে ইতোমধ্যে রাজশাহীতে জনতার জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে। মিছিল সহকারে উৎসবমুখর পরিবেশে নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেছেন।
এদিকে সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে সারদার পুলিশ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপণী কুচকাওয়াজ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে রাজশাহী মাদরাসা মাঠে রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত জনসভায় অংশগ্রহণ নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর আগমণে আমের রাজধানী রাজশাহী উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে সুন্দর এ নগরীকে। ব্যানার-ফেস্টুন-তোরণে ছেয়ে গেছে গোটা শহর। শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, পার্ক, স্থাপনা, ভবন, দফতরগুলোকে সাজানো হয়েছে বিশেষ সাজে।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি মেগা প্রকল্পসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুনে। মাদরাসা ময়দানে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক নৌকার আদলে মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। সকাল আটটার পর থেকেই জনসভাস্থলের দিকে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। সকাল ৯টার পরে মাদরাসা মাঠের প্রবেশমুখগুলো খুলে দেওয়া হলে ধীরে ধীরে প্রবেশ করতে থাকেন নেতাকর্মীরা। নিরাপত্তার স্বার্থে সবাইকে তল্লাশির পরে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
রাজশাহী মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাদরাসা ময়দানের দিকে আসতে শুরু করেছেন। দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রঙের শার্ট, টি-শার্ট ও টুপি পড়ে নানান রকমের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে জনসভাস্থলের দিকে আসছেন। পুরো রাজশাহী মহানগরীই এখন মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনে গোটা নগরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিরাপত্তার কাজ করছেন বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের টানা মেয়াদে উন্নয়ন কর্মসূচির পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের প্রতি জনপ্রিয়তা ও সমর্থনে বদলে গেছে বরেন্দ্রভূমি খ্যাত রাজশাহীর জনপদ। তাই টানা তিনটি জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনেই নৌকার প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উন্নয়নের বার্তা দিতে নতুন বছরের শুরুতে রোববার (২৯ জানুয়ারি) ভোট প্রার্থনায় রাজশাহী আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত নির্বাচনের আগেও রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের জনসভায় নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। প্রায় পাঁচ বছর পর আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও উন্নয়নের বার্তা নিয়ে পদ্মাপাড়ে ভোট প্রার্থনায় আসছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের পর নতুন বছরে প্রথম কোন জনসভায় যোগ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গত বছর (২৪ নভেম্বর) যশোরে জনসভায় আগামী নির্বাচনেও জনগণের কাছে নৌকার জয়ে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের ধারাবাহিকতায় আগামী দিনে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভোট প্রার্থনা করেন। পরে ৪ ও ৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে দলীয় জনসভাতেও ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।
২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর এই ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানেই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন। এরও আগে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর বাগমারায় ও ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চারঘাটে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেন তিনি। ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পবার হরিয়ানের বিশাল জনসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
এবারও রাজশাহীবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো দাবি-দাওয়ার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ‘কৃতজ্ঞতা’ জানানোর ইচ্ছা পোষণ করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের উন্নয়নে ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন এবং ৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মোট ৩১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর শেষে বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠের জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন তিনি।
সারাবাংলা/এনআর/এমও