যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু ভাবে বলেই পরামর্শ দেয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩২
ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধু ভাবে বলেই বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়। শত্রু ভাবলে আক্রমণ করত। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও দুই এশিয়ান পরাশক্তি চীন ও ভারতের সঙ্গেও আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।’
‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অর্জন-সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক এক নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। রোববার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট (বিএসটি) এই সংলাপের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসটির সভাপতি প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ।
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, “বর্তমান বিশ্বে তিন প্রধান পরাশক্তি ও অন্যান্য পরাশক্তির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ‘সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ বঙ্গবন্ধুর এই নীতিসহ অন্যান্য নীতি বজায় রাখার সুফল পাচ্ছি। ভৌগোলিক দিক দিয়ে ছোট হলেও ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশের ওপর এশিয়া ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নজর পড়েছে।”
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান তিন সম্পদ হলো জনসংখ্যা, পানি ও ভূ-গর্ভস্থ সম্পদ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোডম্যাপ অনুযায়ী আমাদের পররাষ্ট্রনীতি চালিত হয়। এই নীতির তিনটি পলিসি প্যাকেজ আছে— ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসি, পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি ও রিজিওনাল পিস অ্যান্ড স্টাবিলিটি। ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসির পাঁচটি প্রধান দিক ১. ট্রেড ও বিনিয়োগ ২. রফতানি ৩. জনশক্তি ৪. প্রযুক্তি ও ৫. গুণগত সেবা।’
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে প্রধান তিন চ্যালেঞ্জ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন। সবগুলো দেশের সঙ্গেই আমাদের ভালো সম্পর্ক থাকার জন্যই তারা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করছে। এদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি, ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক ব্যবসা ৭ বিলিয়ন ডলারের মতো আর চীনের সঙ্গে ১৫ বিলিয়ন ডলারের মতো। এছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সৌদি আরব যেখানে ২৬ লাখ বাংলাদেশি কাজ করে। জাপান সবচেয়ে বেশি ঋণ দেয়, ঐতিহাসিক বন্ধু রাশিয়া, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাহায্য করতে পারে। বাংলাদেশ নীতিগত কারণে এসব রাষ্ট্র ও সংগঠনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘বর্তমানে পররাষ্ট্রনীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা একটি বড় অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হয়ে একটি ঐতিহাসিক অর্জন করেছি। ২০২৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। বর্তমান সরকারের নীতির কারণেই আমরা সমুদ্র বিজয় করেছি, প্রায় ৭০ বছর ধরে যে সীমান্ত সমস্যা ছিল, সেই ছিটমহল জটিলতার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। এসব সাফল্যের পেছনে পররাষ্ট্রনীতির ভূমিকা রয়েছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার প্রধান চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে রাখা। সেখানেও পররাষ্ট্রনীতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
সারাবাংলা/আরএফ/এনএস