Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় সাত্তারকে জেতাতে সরকার সব করছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:৪২

ঢাকা: ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনে উকিল আবদুস সাত্তারকে জেতাতে সরকার গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকেই নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে যাত্রাবাড়ীতে পদযাত্রা কর্মসূচির শুরুর আগে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের হাতে ভোট নিরাপদ কেমন করে? এই যে, ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় আমাদের এমপি সাত্তার সাহেব (উকিল আবদুস সাত্তার) ছিলেন, তিনি পদত্যাগ করলেন। তারপরে উনি নিজে ভুল করে যখন আবার নির্বাচন করতে গেলেন তাকে আমরা বহিষ্কার করে দিয়েছি।’

‘এখন তাকে জয়লাভ করানোর জন্য সমস্ত নীতি-নৈতিকতা বাদ দিয়ে আপনারা (ক্ষমতাসীন দল) আপনাদের প্রার্থীকে প্রত্যাহার করেছেন, যে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী, যার কোন দল নাই- হাসিব তাকে দুই দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না, গুম। অর্থাৎ সাত্তারকে জেতানোর জন্য এখন সমস্ত নির্বাচন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন। এই তো হচ্ছে আপনাদের (সরকার) নির্বাচনের ব্যবস্থা। এখন আপনারা মাগুরার কথা বলেন। ‘মাগুরার দাদা’ বানিয়েছেন ব্রাক্ষণবাড়িয়াকে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আপনারা কি গত দুইটা নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন? ভোট কেউ দেয়নি। ওরা নিজেরা নিজেরা ঘোষণা করে দিয়েছে। একটা ভোটে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে, আরেকটা ভোট করেছে আগের রাত্রে। এই ধরনের ভোট জনগণ আর মানবে না। আপনাদের (সরকার) হাতে ভোট নিরাপদ নয়। সুতরাং এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।’

পদযাত্রার কারণ ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এই পদযাত্রা গণতন্ত্রের জয়যাত্রা, আমাদের এই পদযাত্রা সভ্যতার জয়যাত্রা, আমাদের এই পদযাত্রা মানুষের অধিকার আদায় করবার জয়যাত্রা, আমাদের এই পদযাত্রা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জয়যাত্রা, আমাদের এই পদযাত্রা আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জয়যাত্রা। আওয়ামী লীগের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। তারা প্রতিদিন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকা শহরে পদযাত্রা করছি। আমাদের প্রতিটি কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে কেউ দুবর্লতা মনে করবেন না। এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিলে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে। তাই পরিষ্কার করে বলতে চাই, এখন এই পদযাত্রায় জনগণ সম্পৃক্ত হচ্ছে। এই যাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করব। এই পদযাত্রার মধ্য দিয়ে আমরা নতুন যাত্রা শুরু করেছি, নতুন অধ্যায় শুরু করেছি। আমাদের এই পদযাত্রা আমাদের মুক্তির লড়াই, এটা আমাদের জনগণের অধিকারকে পুনরুদ্ধার করবার লড়াই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে চালের দাম কত হয়েছে? জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে তারা ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল না? আজকে চাল কত দামে খাচ্ছেন আপনারা? ডালের দাম কত? লবনের দাম কত? আটার দাম কত? সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। পুরান ঢাকায় গ্যাস নাই। শুধু পুরান ঢাকা নয়, গোটা বাংলাদেশে এখন গ্যাস নাই। ওরা গ্যাসও খেয়ে ফেলেছে।’

‘আওয়ামী লীগ পালায় না’- রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এরকম বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এক এগারোতে গ্রেফতার হওয়ার পরে কারা কারা পালিয়েছেন দেশে ছেড়ে- এটা সবাই জানে। তাই না। কিন্তু পালায়নি একজন। তিনি হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ওই সময়ে পরিষ্কার করে বলেছিলেন যে, বিদেশে আমার কোনো জায়গা নাই। এদেশ আমার, এই মাটি আমার। আমার জন্ম এখানে, মরলে আমি এখানেই মরব।’

‘তাই বলব, এসব কথা বলে লাভ নাই। এদেশের মানুষ সব জানে- কে কোথায় পালায়, কবে পালায়, কেমন করে পালায় সবাই জানে। আমরা এজন্য কথাটা বলছি, এখনো সময় আছে আপনারা ১৪/১৫ বছর ধরে এদেশের মানুষের ওপরে যে অত্যাচার করেছেন, সেই অত্যাচারে এদেশের মানুষ এখন এমন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে যে, আপনারা আর কোনো রাস্তা খুঁজে পাবেন না’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। দুপুর আড়াইটায় পদযাত্রা শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে।

পদযাত্রায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, হাবিবুর রহমান হাবিব, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, মোহাম্মদ মোহন, হাবিবুর রশীদ হাবিব, তানভীর আহমেদ রবিন, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুব দলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, ইসহাক সরকার, গোলাম মওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএস জিলানি, রাজিব আহসান, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, জাসাসের লিয়াকত আলী, ছাত্র দলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

সারাবাংলা/ এজেড/ এনইউ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর