ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে উপনির্বাচন: জোটের দ্বন্দ্বে সুবিধায় জাপা
৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:০৬
ঠাকুরগাঁও: রাত পোহালে অনুষ্ঠিত হবে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের উপ-নির্বাচন। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর জন্য এবার অগ্নিপরীক্ষা। সময় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী উত্তাপ চরমে। তবে ১৪ দলের মনোনীত প্রার্থী ইয়াসিন আলীর পক্ষে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ না থাকায় সংশয়ে আছেন ওর্য়ার্কাস পার্টির নেতাকর্মীরা। তবে শক্ত অবস্থানে আছেন দুই বারের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
স্থানীয়রা বলছেন, শেষ পর্যন্ত ওয়াকার্স পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। এমনকি আওয়ামী লীগের যারা জনসংযোগ করেছেন, তারাও ইয়াসিনের পক্ষে কাজ করছেন কিনা তা নিয়েও সংশয় আছে।
স্থানীয় ভূমিহীন নেতা রমজান আলী বলেন, ‘গোপালই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী ইয়াসিন আলীর জন্য। গোপাল প্রার্থী না হলে ইয়াসিনের বিজয় নিশ্চিত ছিল।’
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত নেতা গোপাল চন্দ্র রায় দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায় বলেন, ‘গোপাল চন্দ্র রায় যে পদ্ধতিতে নির্বাচনী প্রচারণা করছেন, তার মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেওয়া হচ্ছে।’ এজন্য তিনি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়াসিন আলী তুরুপের তাস। তাকে নিয়ে খেলছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ইমদাদুল হকসহ আওয়ামী লীগের ৪ নেতা। তাদের কেউ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় পিছুটান দিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী বলেন, ‘ইয়াসীন আলী কি আমাদের দলের প্রার্থী? তবুও আমরা তার হয়ে কাজ করছি। তাছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি একটি রাজনৈতিক দল। তারা কেন আমাদের উপর ভরসা করবে?’
ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক বলেন, ‘এক সংকটময় কালে ১৪ দলীয় জোট গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের কিছু নেতা সেটি ভুলে গিয়ে ব্যক্তি স্বার্থে জড়িয়ে পড়েছেন।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের রশি টানাটানি এবং গোপালের ‘সাম্প্রদায়িক’ অবস্থানের কারণে ভোটের মাঠে এখন শক্ত অবস্থানে রয়েছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এই আসনে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন- ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) শাফি আল আসাদ ও জাকের পার্টির এমদাদুল হক।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান পদত্যাগ করায় অন্যান্য আসনের মতো ঠাকুরগাঁও-৩ আসনটি শূন্য হয়ে যায়। ভোট ও জোটের রাজনীতির সমীকরণে ঠাকুরগাঁও-৩ আসন আসন্ন উপ-নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
এক ফেব্রুয়ারি ইভিএম পদ্ধতিতে এখানের ১২৮টি ভোট কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৪১ জন।
সারাবাংলা/এমও