Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘৩ বছরে ভোজ্যতেলে ৪০ শতাংশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা সম্ভব’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৪৭

ঢাকা: আগামী তিন বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলে ৪০ শতাংশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারি দলের সদস্য এম. আব্দুল লতিফ। লিখিত জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে দেশে তৈলবীজ উৎপাদনে সক্ষমতা বাড়াতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়ন্ত্রণাধীন তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো-তেল জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদাপূরণ ও আমদানি ব্যয় কমানো। প্রকল্পটি সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন ও তিল ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করছে।

একই প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আরও জানান, প্রকল্পের অধীনে তেল ফসলের মোট উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৌশল হিসেবে স্বল্পজীবনকালের রোপা আমনের মাঝে স্বল্পজীবনকালের সরিষা আবাদ করা হচ্ছে।

প্রকল্পটি বিভিন্ন শস্যবিন্যাসে তেল ফসলকে অন্তর্ভুক্ত করে মাঠে প্রদর্শনী বাস্তবায়ন, প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস এবং কর্মশালার আয়োজন করছে। বর্তমান ২০২২-২০২৩ অর্থ-বছরে প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪টি জেলার ২৫০টি উপজেলায় ১৩ হাজার ৯৬৯টি বিভিন্ন তেল ফসলের প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ৩ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমি তেল ফসলের আওতায় এসেছে।

তিনি আরও জানান, রোপা আমন-পতিত-বোরো শস্যবিন্যাসে সরিষাকে অন্তর্ভুক্ত করে আবাদি এলাকা বাড়ানো হচ্ছে। তাছাড়া অনাবাদি জমি, চরাঞ্চল, হাওর, পাহাড়ি এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোকে তেল ফসলের আবাদের আওতায় আনা হচ্ছে।

সরকারি দলের মো. শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, কৃষি নমুনা শুমারি (শস্য) ২০২০ অনুসারে, বর্তমানে দেশে মোট কৃষি জমির পরিমাণ ২ কোটি ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮৭ একর। এর মধ্যে চাষযোগ্য কৃষি জমির পরিমাণ এক কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৪২ একর। কৃষি শুমারি ২০১৯, প্রকাশিত ডিসেম্বর, ২০২২ অনুসারে দিন দিন কৃষি জমি দশমিক শুন্য দুই শতাংশ হারে কমছে।

এই কৃষিজমি কমা বন্ধে ৬ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ফসলের উলম্ব সম্প্রসারণের মাধ্যমে মোট আবাদি জমি বৃদ্ধি করা, উদ্ধুদ্ধকরণের মাধ্যমে কৃষকদের কৃষি জমি যাতে অকৃষি খাতে না যায়, তার পরামর্শ প্রদান, কৃষি জমি রক্ষায় নদী ভাঙন রোধকল্পে নদীর তীরবর্তী এলাকায় তাল, খেজুর, নারিকেল জাতীয় ফসল রোপণে উদ্ধুদ্ধকরণ করাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় ও পরামর্শ প্রদান, ইটভাটায় যাতে একাধিক ফসল হয়, সেসকল জমি কৃষি কাজের জন্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি এজন্ডার্ভুক্ত করা হয়েছে।

ওই সভা থেকে সকলকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নিদের্শনা দেওয়া এবং চিনিকল, পাটকল, বস্ত্রকল ও রেলওয়েসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের পতিত জমি চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের মো. হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে ভর্তুকির সুফল সরাসরি প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে বর্তমান সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই উৎপাদন খরচ হ্রাসের পদক্ষেপ হিসেবে কয়েক দফায় সারের দাম কমিয়েছে।

কমানোর তালিকায় টিএসপি ৮০ টাকা থেকে কমিয়ে ২২ টাকা, ডিএপি ৯০ টাকা থেকে ১৬ টাকা এবং এমওপি ৭০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫ টাকায় নির্ধারণ করেছে। এর জন্য কোন নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে না। সেচ কাজে যে সকল কৃষক বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তারা সরাসরি ২০ শতাংশ রিবেট হিসেবে সুবিধা ভোগ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রেও নিবন্ধনের কোন প্রয়োজন হয় না। তবে কৃষি উপকরণ বিতরণের সুবিধার্থে কৃষকদের তালিকাভুক্ত করে কৃষি উপকরণ কার্ড প্রদান করা হয়েছে।

সারাবাংলা/ এ এইচ এইচ/এনইউ

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর