কাতারে হতাহত বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা নিরূপণের নির্দেশ স্থগিত
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:৫৫
ঢাকা: ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে কাতারে অবকাঠামোর নির্মাণ কাজের সময় বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিক হতাহতের বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আগামী ৬ মার্চ শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান।
এর আগে, কাতার ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সেখানে ১১টি স্টেডিয়ামসহ অন্যান্য অবকাঠামোর নির্মাণকালে কতজন বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিক হতাহত হয়েছেন, তা নিরূপণ করার পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
গত ৩০ জানুয়ারি এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে বিশ্বকাপ উপলক্ষে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কাতারে ১১টি স্টেডিয়াম, রাস্তা, হোটেল ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত অভিবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকের তালিকা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ কেন্দ্রিক নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে আনুমানিক সাড়ে ৪০০ অভিবাসী নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যুর যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্যি হলে এর মধ্যে বাংলাদেশের কতজন নির্মাণ শ্রমিক রয়েছেন, সে তথ্য সংগ্রহ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া কাতার বিশ্বকাপ কেন্দ্রিক বিভিন্ন নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে অভিবাসী বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিক হাতহত হয়ে থাকলে তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব, প্রবাসী কল্যাণ সচিব, কাতারে বাংলাদেশ দুতাবাস, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন প্রধান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফিফা), কাতারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (ইন্টেরিয়র) ও শ্রমমন্ত্রীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও সহকার অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আবুল কালাম খান (দাউদ)।
বৃটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জনের পর থেকে কাতারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলংকার ১২ জন মারা গেছেন। পাকিস্তান বাদে চারটি দেশে গার্ডিয়ানের নির্ভরযোগ্য সূত্র ও দেশগুলোর সরকারি হিসাবই বলছে— ২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৫ হাজার ৯২৭ জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মৃত বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ১ হাজার ১৮ জন।
কাতারে পাকিস্তানের দূতাবাস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে ৮২৪ জন পাকিস্তানি শ্রমিক মারা গেছেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস