‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ থামাতে পারবে না’
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫১
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ থামাতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এ সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আজকে আমরা যে যোগাযোগ ব্যবস্থা করছি এটা শুধু বাংলাদেশ না, আমাদের আঞ্চলিকভাবে বা বিশ্বব্যাপী যাতে একটা যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে সে ব্যবস্থাটাই নিচ্ছি। কারণ ভৌগোলিক অবস্থানটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। আমরা সেটাকেই কার্যকর করতে চাই।’
‘বাংলাদেশ বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেল। সেটা সম্ভব হয়েছে কেন? ২০০৯ এ আমরা সরকার গঠন করেছি। ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র রয়েছে। এই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘এখানেই না, ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। যাতে এই বদ্বীপটা জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়। এ দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন নিয়ে বাঁচতে পারে। সেই পরিকল্পনাও করে দিয়েছি। কাজেই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ থামাতে পারবে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’
এর জন্য জনগণের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি পাতাল মেট্রোরেলসহ উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান উন্নয়নের মহাযজ্ঞে বাংলাদেশের সাফল্য এনে দিতে। প্রধানমন্ত্রী পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের আরেক নবযাত্রা শুরু হল বলেও মনে করেন।
এটুআইয়ের সহযোগিতায় শিল্পী মমতাজের কণ্ঠে মেট্রোরেলের থিম সং পরিবেশন করা হয়।
সমাবেশের আগে সকাল ১১টার পর রূপগঞ্জে পুর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভপতি ও বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক), জাপানি রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকা প্রধান তোমোহিদি ইচিগুচি।
প্রসঙ্গত, সরকারের টানা মেয়াদে বদলে গেছে যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন। যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্মার্ট পরিবহন যুগেও প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে গত বছর বিজয়ের মাসে উড়াল মেট্রোরলের উদ্বোধন করে নতুন দ্বার সূচনা করেছে সরকার। মেগাসিটিতে নাগরিক পরিবহন সেবায় এবার উড়াল মেট্রোরেলের পর স্মার্ট পরিবহন হিসাবে দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এটি মূলত দেশের প্রথম পাতালরেল হতে যাচ্ছে।
এ পাতালরেল নির্মাণে ব্যয় হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা জাপানি ঋণ আর বাকি অর্থ ব্যয় করা হবে। আর বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা ২০২৬ সালে হবে দৈনিক ৮ লাখ। ২০৩০ সালের মধ্যে এই ছয়টি মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে শেষ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২৮ সালের মধ্যে এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুটের নির্মাণকাজ শেষ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে ২০৩০ সালের মধ্যে এমআরটি লাইন-৫ : সাউদার্ন রুট, এমআরটি লাইন-২ এবং এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।
সারাবাংলা/এনআর/ইআ