Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই, যা চাই পেয়ে যাই’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৪৭

ঢাকা: রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভপতি এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, আপনি আমাদের রূপগঞ্জে অনেবার এসেছেন। বার বার আসেন। প্রতিবারই উন্নয়নের বার্তা নিয়ে আসেন। আপনি আমাদের অন্তরে স্থান করে নিয়েছেন। আমাদের আর চাওয়া-পাাওয়ার কিছু নাই। আমরা যা চাই তা পেয়ে যাই।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠান উপলক্ষে সুধী সামাবেশে তিনি একথা বলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ জমতা উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন রাজউকের কমার্শিয়াল প্লট মাঠে এ সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে, সকাল ১১টার পর রূপগঞ্জে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় ‘এমআরটি-১’ এর আওতায় প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা।

পরে সুধী সমাবেশে বক্তব্যের শুরুতেই শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার বলে স্লোগান দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক। এ সময় সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা মন্ত্রীর সঙ্গে স্লোগান দিতে শুরু করেন। তখন স্লোগান স্লোগানে সুধী সমাবেশে মুখরিত হয়ে ওঠে।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনি জনসভায় মুড়াপাড়া কলেজ ও পাইলট হাইস্কুলটি সরকারি করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। এজন্য আপনাকে রূপগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।’

২০১৩ সালে একটি দৃষ্টিনন্দন বালু ব্রিজ উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সেই বালু ব্রিজ দিয়ে তিনি এই সমাবেশে এসেছেন- সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘এক মাস আগে এখানে এসে বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেছেন। আজ আবার পাতাল মেট্রোরেল নির্মাণকাজের উদ্বোধন করতে এসেছেন। আপনি এতবার এসেছেন যে, মানুষের অন্তরে স্থান করে নিয়েছেন।’

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় যেতে পারিনি। কিন্তু রূপগঞ্জের একটা ইউনিয়নের প্রত্যেকটি কেন্দ্রে নৌকা জয়লাভ করেছিল। কোনোটাতেই হারে নাই। ২০০৮ সালেও প্রত্যেকটা কেন্দ্রে নৌকা জয়লাভ করে। আজ পর্যন্ত রূপগঞ্জের প্রতিটি ইউনিয়নে নৌকা জয়লাভ করে। আমাদের সর্বোচ্চ উন্নয়ন হয়েছে। কোনো উন্নয়ন আর বাকি নাই। আমাদের যতগুলো রাস্তা ছিল পাকা হয়ে গেছে। কোনো রাস্তা আর বাকি নাই। রিপিয়ারিং কাজ কিছু চলমান রয়েছে। দুই/তিন মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ হলে আর কোনো উন্নয়ন বাকি থাকবে না। সমস্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় আপনি ভবন করে দিয়েছেন।’ এছাড়া দুই বছর আগেই রূপগঞ্জ শতভাগ বিদ্যুাতায়িত উপজেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বলেও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

রূপগঞ্জবাসীর আরও চাওয়া পাাওয়ার আর কিছু নাই- উচ্চারণের পর গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, তবে একটি দাবি আপনার কাছে আছে। স্বাধীনতার সময় পাকবাহিনী আমাদের সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে। সেই স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যারা পিতামাতা হারায়- তারা অন্নের খোঁজে, আশ্রয়ের খোঁজে ঢাকায় আসে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে আশ্রয়হীনদের খুঁজে বের করে একটি তালিকার মাধ্যমে রূপগঞ্জের চনপাড়ায় পুর্নবাসিত করেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৪ সালের পর বেশিদিন বঙ্গবন্ধুকে বাঁচতে দেওয়া হয়নি। পঁচাত্তর সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসে, স্বৈরশাসক জিয়া ক্ষমতায় আসে। পরে যখন তারা জানে, এরা তো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, এদের বঙ্গবন্ধু পুনর্বাসিত করেছেন। সেই তথ্য জানার পর তাদের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি। এমনকি ভোটের অধিকার পর্যন্ত তারা পায়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে ২০১১ সালে তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এখন সরকার থেকে তাদের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু একটি সুযোগ-সুবিধা পায়নি তারা। সেই দাবিটা আপনার কাছে করছি। যাদের জমি নাই আপনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এই চনপাড়ায় তাদের পুর্নবাসনের অনুরোধ জানাচ্ছি।’

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, ‘এই মেট্রোরেল যখন হয়ে যাবে তখন উন্নত বিশ্বের বাহক হিসেবে এটা পরিগণিত হবে। মেট্রোরেল চালু হয়ে গেলে এই এলাকা থেকে রাজধানীর প্রত্যেকটা এলাকায় যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনের ফলে আজ থেকে পূর্বাচল উপশহরের উন্নয়ন গতি বেড়ে যাবে বলেও মনে করেন গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক।

পাতাল মেট্রোরেল নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভপতি এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, জাপানি রাষ্ট্রদূত ইকো নাওকি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক। এটুআই’র সহযোগিতায় শিল্পী মমতাজের কণ্ঠে মেট্রোরেলের থিম সং পরিবেশনসহ পাতাল মেট্রোরেলের ওপর একটি ভিডিও তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয় এ সময়।

আর সুধী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকা প্রধান তোমোহিদি ইচিগুচি। সমাবেশ মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন- শেখ হেলাল উদ্দিন, এমপি, শামীম ওসমান, এমপি, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশেনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, সেলিম ওসমান, এমপি, নজরুল ইসলাম, এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা, এমপি।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

গোলাম দস্তগীর গাজী টপ নিউজ রূপগঞ্জ শেখ হাসিনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর