Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘অপ্রস্তুত’ মেলা দ্বিতীয় দিনেই সরগরম

আসাদ জামান
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:৩০

অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় দিনটা প্রথম দিনের চেয়ে ভালো গেছে— খুব সহজ করে বললে এমনটিই বলতে হবে। কেননা, বিকেল ৩টায় মেলার প্রবেশ দ্বার খোলার পর বিপুল সংখ্যক মানুষ মেলায় প্রবেশ করে এবং রাত ৯ টায় মেলার দ্বার বন্ধ হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের উপস্তিতিতে মেলা ছিল সরগরম।

কবি-সাহিত্যিক-লেখক-প্রকাশক— এই শ্রেণিটাকে বাদ দিলে অমর একুশে বইমেলায় যারা আসেন, তাদেরকে মোটা-মুটি চার শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এরা হলেন— বইয়ের ক্রেতা, বিক্রেতা, পাঠক এবং দর্শনার্থী।

বিজ্ঞাপন

ক্রেতারা মেলায় আসেন, ঘোরেন-ফেরেন, বই কিনে ফিরে যান। বিক্রেতাদের কথা আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। আর পাঠক? এরা সারা বাছরই বই কেনেন। তবে মেলার সময় তাদের বই কেনার উৎসাহ বহুগুণ বেড়ে যায়। আর দর্শনার্থীরা মেলায় আসেন দেখতে। প্রিয়জনের হাত ধরে মেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর মধ্যে যে নৈস্বর্গিক আনন্দ, সেটা তারা পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করেন অমর একুশে বইমেলায়।

মাঘের সন্ধ্যায় না শীত, না গরম পরিবেশে মেলার বিস্তৃত পরিসরে যাদের দেখা মিলল, তারা যে বেশির ভাগই ‘দর্শনার্থী’, তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কারণ, ঘুরে-ফিরে খালি হাতেই ঘরে ফিরেছেন তারা। বই হাতে ঘরে ফিরছে— এমন দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়েনি।

মেলার দ্বিতীয় দিনেও অংসখ্য স্টল এবং বেশ কয়েকটি প্যাভিলিয়ন অপ্রস্তুত দেখা গেছে। কাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি সাজসজ্জার কাজও চলমান রয়েছে কোনো কোনো স্টল ও প্যাভিলিয়নের। কেউ কেউ আবার ইনকমপ্লিট অবস্থায় বই তুলে ফেলেছে স্টল প্যাভিলিয়নে। দ্বিতীয় দিনের মেলা শুরুর পর নির্মাণ কাজের পাশাপাশি কৌতুহলী পাঠক ও দর্শনার্থীদের সেবা অব্যাহত রেখেছে তারা।

বিজ্ঞাপন

তবে কিছু কিছু স্টল এবং প্যাভিলিয়নের নির্মাণ কাজ বাকি থাকলেও প্রথম দিনের মতো মেলাজুড়ে ইট, কাঠ, বালু, সিমেন্ট, টিন, রড, কাগজ, লোহা, তারকাটা, কস্টেপ, পাইপ, ককশিট, রংয়ের ডিব্বা, পলিথিন, দড়ি, সুতা, ঝুড়ি, কোদাল, বেলচা, কাপড়, পাইপ, পানির বোতল, লাঠি, পেরেক, বালতি, সোলা, বাঁশ, কাঁচের টুকরা, হাডবোর্ডসহ অন্যান্যা আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায়নি। দ্বিতীয় দিনের মেলা শুরুর আগেই পূর্বের নির্মাণবর্জ্য সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে মেলা জুড়ে যে ধূলার রাজত্ব, সেটা থেকে এখনো নিস্কৃতি মেলেনি।

বাড্ডা থেকে মেলায় আসা আহমেদ আব্দুল কাইয়ুম সারাবাংলাকে বলেন, ‘যে যাই বলুক, মেলা জমতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। মেলায় বেশি সংখ্যক মানুষকে আনতে হলে পরিবেশ আরও উন্নত করতে হবে। ধূলা-বালি, ময়লা-আবর্জনাযুক্ত মেলায় কোনো সচেতন লোক আসতে চাইবে।’

মেলায় বই বিক্রির বিষয়টি এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। কোনো কোনো স্টল ও প্যাভিলিয়নে হালকা ভিড় লক্ষ করা গেলেও বই বিক্রি হতে দেখা যায় নি। বই ধরে উল্টা-পাল্টা দেখে চলে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। অবশ্য এ নিয়ে প্রকাশক বা বিক্রেতাদের তেমন কোনো খেদ নেই।

প্রকাশনী সৃংস্থা ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটে (ইউপিএল)-এর প্রধান বিক্রয় কর্মকর্তা মো. ইউসুফ বলেন, ‘আরও দুয়েক দিন লাগবে মেলা জমে উঠতে। তবে কাল যেহেতু শুক্রবার। এমনও হতে পারে কালই মেলা জমে উঠেছে। আর মানসম্মত বইয়ের পাঠক এখনো আছে। তাই বই বিক্রি নিয়ে কোনো দুঃচিন্তা করছি না।

মেলার চতুর্থ দিনে ঠিক কতগুলো নুতন বই এসেছে, সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দিতে পারেনি মেলা কর্তৃপক্ষ। তবে বিকেল সোয়া ছয়টায় বাংলা একাডেমির ঘোষণা মঞ্চ থেকে জানানো হয়, মেলার দ্বিতীয় দিন বিকেল ৬টা পর্যন্ত তাদের হাতে ২১টি নতুন বইয়ের তালিকা এসেছে।

এদিকে প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মেলার দ্বিতীয় দিনে তারা ‘আমার জীবনানন্দ’ (আবদুল মান্নান সৈয়দ), ‘প্রিয় ১৫ গল্প’ (আনোয়ারা সৈয়দ হক), ‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’ (পিয়াস মজিদ), ‘আত্মগত দার্শনিক’ (মুসা আল হাফিজ), ‘নেশা’ (খসরু চৌধুরী), ‘আকুপ্রেসার’ (আলমগীর আলম), ‘ইসলামি ব্যাংকব্যবস্থার শুভংকরের ফাঁকি’ (মোহাইমিন পাটোয়ারী), ‘যক্ষের ধন’ (হেমেন্দ্রকুমার রায়) এবং ‘অনন্যা মা অনন্য স্মৃতি’সহ (জিনাত কিবরিয়া) মোট ৯টি বই এনেছে।

মেলার দ্বিতীয় দিনে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মুল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়। চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত।

সারাবাংলা/এজেড/একে

অমর একুশে বইমেলা বইমেলা ২০২৩ বাংলা একাডেমি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর