মর্গই যেন মৃত, ফ্রিজার থাকলেও নেই মরদেহ রাখার ব্যবস্থা
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:০৪
ঠাকুরগাঁও: মরদেহ সংরক্ষণের জন্য ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ফ্রিজার সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও আজও তা স্থাপন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এতে ফ্রিজারটি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে, মর্গে রয়েছে লোকবলসহ আধুনিক যন্ত্রপাতির সংকট। সনাতন যন্ত্রপাতি দিয়েই চলেছে পোস্টমর্টেমের কাজ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৮ সালে ঠাকুরগাঁওয়ে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে হাসপাতালের মর্গে লাশ সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মরদেহ সংরক্ষণের জন্য ২৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যায়ে ৪ ড্রয়ার বিশিষ্ট একটি আধুনিক মরদেহ সংরক্ষণের ফ্রিজার পাওয়া যায়। কিন্তু আজও তা স্থাপন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের মর্গে নেই পয়ঃনিষ্কাসনের সুবিধা, নেই নিরাপত্তাপ্রহরী, নারী ডোম থাকার কথা থাকলেও তাও নেই। আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং লোকবলের অভাবে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে মর্গটি।
হাসপাতাল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে টাঙ্গন নদীর ধারে শহরের আর্টগ্যালারি এলাকায় মর্গটিতে গিয়ে দেখা যায়, ময়নাতদন্তের জন্য ভবনের সামনে ভ্যানে রাখা হয়েছে একটি মরদেহ। একদিন আগে মারা গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
মৃত ব্যক্তির ছেলে কলিন চন্দ্র রায় বলেন, ‘একদিন আগে বাবা বিষপানে মারা গেছেন। কিন্তু পুলিশ মরদেহটি ময়নাতন্তের জন্য পুলিশ মর্গে পাঠালেও মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দু’দিন ধরে বাবার লাশটি ভ্যানে রাখা হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলার একটি মাত্র মর্গ। তাও আবার বেহাল দশা, জায়গাও সংকুচিত। মরদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মৃতদেহে পচন দেখা দেয়। ফলে ওই মরদেহ সৎকার করার সময় বেগ পেতে হয়।’
মর্গে কর্মরত ডোম সুকুমার মহন্ত বলেন, ‘আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় হাতুড়ি, বাটাল ও করাত দিয়ে মরদেহগুলোর কাটাছেঁড়া করা হয়। নেই কোনো পয়ঃনিষ্কাসনের ব্যবস্থা। প্রায় ৩৭ বছর হয়ে গেল কোন পরিবর্তন দেখছি না।’
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ‘লোকবলসহ মর্গটি আধুনিকায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নতুন ভবন পেলে ফ্রিজারটি স্থাপন করা হবে।’
সারাবাংলা/এমও
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মরদেহ সংরক্ষণ মর্গ