শূন্যরেখায় বাড়ছে রোহিঙ্গাদের ভিড়, সরিয়ে দেওয়া অনিশ্চিত
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:৩২
কক্সবাজার: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখা কোনাপাড়ায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। আগামীকাল রোববার থেকে এই স্থানান্তরের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিলো। এই মানুষগুলো মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠি ‘আরসা ও আরএসও’র মধ্যে সংঘাতের জেরে পালিয়ে শূন্য রেখায় অবস্থান করছেন। তবে আগামীকাল থেকে এসব রোহিঙ্গাদের সরানো হচ্ছে কিনা তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।
রোহিঙ্গা সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি, তুমব্রু সীমান্তে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করা এসব রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছিল। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের রাখার বিষয়ে কথা চলছিল।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, সীমান্তের শূন্যরেখায় সংঘাতের জেরে পালিয়ে তমব্রুতে আশ্রয় নেওয়া ৫৫৮টি পরিবারের রোহিঙ্গার সংখ্যা ২ হাজার ৯৭০ জন। এদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা আগে থেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পের নিবন্ধিত বাসিন্দা। অপর এক-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত। তাদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। নিবন্ধন শেষ আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হবে।
অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা জানান, ‘আগামীকাল রোববার থেকে এসব রোহিঙ্গাদের সরানো হচ্ছে কিনা তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কাজ শুরু হলেই জানানো হবে।’
আরআরআরসি মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘শূন্যরেখা থেকে যারা পালিয়ে এসেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট কমিটির (আইআরসিআরসি) সহায়তায় ইতিমধ্যে তাদের গণনার (তালিকা তৈরি) কাজ শেষ হয়েছে। তমব্রুতে আশ্রিত সব রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে থেকে যেসব রোহিঙ্গার নিবন্ধন রয়েছে, তাদের স্ব-স্ব ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হবে। আর অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নতুন করে নিবন্ধনের আওতায় থাকা রোহিঙ্গাদের আপাতত উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পসংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে।’
সম্প্রতি সীমান্তে ধারাবাহিক সংঘাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কোনারপাড়া শূন্যরেখা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় শিশুসহ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এসব রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে স্থানান্তরের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। এতে প্রশাসন, আরআরআরসি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তারাই যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে ঠিক কবে থেকে কাজ শুরু হবে তা এখন অনিশ্চিত।
সারাবাংলা/এমও