Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘এবার তারেক জিয়ার হাত ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:৪১

নজরুল ইসলাম খান, ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আমরা একবার বাকশালের গোরস্থানের ওপর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে গণতন্ত্র পেয়েছিলাম। এরপর স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে খালেদা জিয়ার হাত ধরে গণতন্ত্র পেয়েছি। এবার আমরা তারেক জিয়ার হাত ধরে এ সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব। বিএনপি বারবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে, এবারও করবে।’

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর নুর আহমদ সড়কে নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে চায় না মন্তব্য করেন সমাবেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ না জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে, না ভবিষ্যতে তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যাবে। জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসার ইচ্ছা যদি তাদের থাকত, তারা জনগণকে কষ্ট দিতে পারত না। তারা আবার ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসতে চায়।’

‘বাংলাদেশে যারা হালাল উপার্জন করে সেই শ্রমিক, কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ আজ চলতে পারছে না। প্রতিদিন জিনিসের দাম বাড়ছে। এ সরকারের কোনো পরোয়া নেই। তিন সপ্তাহের মধ্যে দুইবার জ্বালানির দাম বেড়েছে। যদি এ সরকার জনগণের পরোয়া করত, তাহলে এটা তারা করতে পারত না।’

১১ ফেব্রুয়ারি দেশের সকল ইউনিয়নে বিএনপি পদযাত্রা করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সারাদেশে চলছে। সেটা আরও বেগবান করতে হবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এ অবৈধ সরকারের পতন হবে। আর সেই পতনের আন্দোলনের ইতিহাসের অংশীদার আমরা হব। আগামী শনিবার সকল ইউনিয়নে পদযাত্রা হবে। আমরা কর্মসূচি দিলেই এ সরকার বাধা দেয়। আমরা দেখতে চাই, সারাদেশের কয়টা ইউনিয়নে তারা বাধা দিতে পারে। সব ইউনিয়নে নারীপুরুষ নির্বিশেষে সবাই পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করবে।’

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এ সরকারের পতনের আন্দোলন ত্বরান্বিত করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। এ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন আরও গতিশীল করতে হবে। আমরা একটা মহাযুদ্ধের মধ্যে আছি। এ যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। এ যুদ্ধ গণতন্ত্রের যুদ্ধ, মানুষের ভোটের যুদ্ধ।’

‘সরকার দেশে কর্তৃত্ববাদী, নৈরাজ্যবাদী প্রশাসনসহ যাদের সৃষ্টি করেছে, তাদের থেকে রক্ষা পেতে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আমরা শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য লড়াই করছি না। আমাদের লড়াই হচ্ছে জনগণের জন্য। জনগণের মাধ্যেমে রাষ্ট্রক্ষমতা আবার কেড়ে নিতে হবে। জনগণের অধিকার আদায় করে গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে।’

‘দুর্নীতিবাজদের মুখে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা মানায় না’ মন্তব্য করে দলটির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন তারা মিছিল করলে আমরা নাকি পালানোর জায়গা পাব না। আজ এসে দেখে যান জনসমুদ্র। আমরা যদি ঘোষণা দেই আজ থেকে বাংলাদেশ বন্ধ, তাহলে আপনাদের সে ক্ষমতা নেই আবার চালু করার। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আবার ফিরিয়ে আনতে আরেকটা গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে, সেই ডাক আসবে। তখন সব অচল হয়ে যাবে। তারা নাকি স্মার্ট বাংলাদেশ করবে! দুর্নীতিবাজদের মুখে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা মানায় না।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক বলেন, ‘গাছের ফল যখন পচে যায় তখন সেটা ঝরে পড়ে যায়। আওয়ামী লীগও আজ পচে গেছে। মানুষের হৃদয়ে তাদের আর জায়গা নেই। জনগণ আর তাদের চায় না। ক্ষমতায় আর তারা যেতে পারবে না। ভোটারবিহীন সরকার দেশ পরিচালনা করতে পারে না। আমরা আন্দোলনে নেমেছি। আন্দোলন বানচাল করতে অনেক পাঁয়তারা চলছে। সেটা আর আমরা করতে দেব না।’

দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে শেখ হাসিনা বলেছিলেন অনির্বাচিত সরকার আসলে অশুদ্ধ হবে। তিনি নিজেই তো অনির্বাচিত। তাকে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ চায় না। অবিলম্বে ক্ষমতা না ছাড়লে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। দাবি আমাদের একটাই, তা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’

দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনের সড়কে ভারি প্রাইম মোভারের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে সমাবেশ করে বিএনপি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ও নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের পাশাপাশি বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকেও মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।

সমাবেশের পুরো সময় নেভাল মোড় থেকে নাসিমন ভবনের সামনে হয়ে কাজির দেউড়ি পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। বিপুল জনসমাগমের মধ্যে মঞ্চের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সিনিয়র নেতারা গিয়ে মীমাংসা করে দেন।

নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদিন ও এস এম ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, উত্তর জেলার আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার, কেন্দ্রীয় শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, মৎস্যজীবী সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কক্সবাজার জেলার সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, ফেনী জেলার আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, রাঙ্গামাটি জেলার সভাপতি দীপেন তালুকদার, নোয়াখালী জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, খাগড়াছড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক এম এন আফসার, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন।

সারাবাংলা/আইসি/আরডি

নজরুল ইসলাম খান বিএনপি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর