Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর হার নয়, করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৫৯

ঢাকা: করের হার নয় করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রত্যেক মানুষের উপর চাপ পড়েছে। তাই কর না বাড়িয়ে করের হার যৌক্তিকীকরণ করতে হবে।’

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ২ দিনব্যাপী রাজস্ব সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রথম এই ধরনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে এখনও আয়কর প্রদানকারীর সংখ্যা খুবই কম। অনেক ঝামেলার মধ্যে করতে হয় বলে এ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। আমি মনে করি কোনো জোর-জুলুম খাটবে না, মানুষকে ভয়-ভীতিকর পরিস্থিতিতে ফেলা যাবে না। মানুষকে উদ্বুর্ধ্ব করতে হবে। তাদের জানাতে হবে, আপনি যে কর দেন সেটা কিন্তু আপনার কাজেই লাগে।’

‘আজ রাস্তাঘাট পুল-ব্রিজ বা পোর্ট, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য- সমস্ত ক্ষেত্রে যেগুলি সরকার করে দিচ্ছে সবগুলির শুভ ফলটা ভোগ করছে তো জনগণ। যারা শুভফলটা ভোগ করছেন তাদের তো কিছু দিতে হবে। কারণ রাষ্ট্র তো এমনি এমনি দিতে পারে না’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি সর্বক্ষেত্রে ডিজিটাল সিস্টেমটা হয়ে গেলে পরে কেউ আর কর ফাঁকি দিতে পারবে না। এটা হলো বাস্তব কথা। সেটা একটা বিরাট সুযোগ এনে দেবে। কর দেওয়ার মতো যাদের সামর্থ্য আছে শুধু রাজধানী বা শহরকেন্দ্রিক না, সারাদশের আপামর জনগোষ্ঠীকে যাদের কর দেওয়ার সামর্থ্য আছে, আপনারা দয়া করে কর দেবেন। যেটা আপনাদের সেবায় সরকার কাজে লাগাবে।’

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সরকার ভতুর্কি দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষকে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। রাজস্ব আয় আরও বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকি না দিয়ে সবাইকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আর পিছনে হাঁটবে না, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। সারাবিশ্বে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা, স্মার্ট বাংলাদেশ হিসাবেই গড়ে উঠবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। আয়কর, কাস্টমস, অটোমোটেড এবং ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে করদাতা, ব্যবসায়ী এবং জনগণকে সহজ ও নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির গতিশীলতা চমৎকার ছিল। দুভার্গ্যের বিষয় হলো এই কোভিড-১৯’র অতিমারি, সেই সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশনের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। তার ধাক্কাটাও আমাদের ওপর এসে পড়েছে। এটা মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর সেটা যেতে পারব যত বেশি আমরা কর আদায় করতে পারব, দেশের উন্নয়নে কাজ করতে তাহলে এটা করতে পারব। আরও বেশি মানুষ যাতে কর দেয় সেটা সম্প্রসারণ করতে হবে। যেহেতু এখন মূল্যস্ফীতি, আমরা কর হার বৃদ্ধি করতে চাই না। কিন্তু করদাতার সংখ্যা আমরা বাড়াতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই প্রত্যেকটা সংসদ সদস্য আয়কর দেবে। এমনিতে আমাদের সংসদ সদস্যরা ব্যক্তিগতভাবে কর দিতেন, কিন্তু পার্লামেন্ট মেম্বার হিসাবে তাদের আয়কর রেয়াত ছিল। আমি সেটা পুনরায় চালু করি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকেও কর দিতে হবে। শুধুমাত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতি ছাড়া সবার ক্ষেত্রেই একই নিয়ম। এরপর সরকারি কর্মচারীদেরও আয়করের আওতায় আনা হয়। তাতে আমাদের আয়কর দাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।’

অনুষ্ঠানে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম এবং সদস্য ড. আব্দুল মান্নান শিকদার বক্তৃতা করেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য প্রদ্যুৎ কুমার সরকার ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে এনবিআরের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী সম্মেলন উদ্বোধন শেষে স্টলসমূহ এবং রাজস্ব মিউজিয়াম পরিদর্শন করেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

কর হার করদাতা প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর