মায়ের পাশে অন্তিম শয়নে মোছলেম উদ্দিন
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:২৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে হাজারও মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের চোখের জলে এবং ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে মায়ের কবরের পাশে শায়িত হলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে তার তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গরীবুল্লাহ শাহ মাজারে তাকে দাফন করা হয়। দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা চোখের জলে বিদায় দেন তাদের প্রিয় এই নেতাকে।
মোছলেম উদ্দিনের মৃত্যু দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অপূরণীয় ক্ষতি জানিয়ে এসময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন আহমেদ গণমানুষের নেতা ছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন আমার প্রয়াত পিতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সাথে। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তিনি সব আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রসেনানী ছিলেন। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।’
মোছলেম উদ্দিন আহমেদ আওয়ামী রাজনীতির একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা ছিলেন উল্লেখ করে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী রাজনীতির একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা ছিলেন মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একজন সজ্জন, সহনশীল ও ধৈর্যশীল নেতা ছিলেন তিনি। কর্মী থেকে তিল তিল করে একজন দক্ষ নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন নিজেকে। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সে কজন সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে তিনি একজন। অসুস্থতার মধ্যেও গত ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে রাতদিন পরিশ্রম করেছেন। এরপর দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তার মৃত্যুতে আমরা একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা হারালাম।’
মোছলেম উদ্দিন অন্যদলের রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করতেন জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন আহমদ ত্যাগি নেতা ছিলেন। কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন। দল আলাদা হলেও একসাথে আমরা রাজনীতি করেছি। তার মৃত্যুতে একজন রাজনৈতিক বন্ধু হারিয়েছি।’
প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের অন্তিম যাত্রায় অংশ নিতে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাবউদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সোলেমান শেঠসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, গত রোববার দিবাগত রাতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৫ বছর বয়সে মারা যান মোছলেম উদ্দিন আহমদ। প্রায় এক বছর ধরে অন্ত্রের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। গত একমাস তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য জাসদ নেতা মাঈনুদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আসনের উপ-নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/এমও