Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাত পোহালেই রেলওয়ের তিন প্রকল্পের উদ্বোধন

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:১৯

ফাইল ছবি

ঢাকা: এক সঙ্গে তিন চলমান প্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এরমধ্যে রয়েছে আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন ও টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প আর ঈশ্বরদি-রূপপুর রেলপথে ট্রেন চলাচল প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত থেকে এই তিন প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ: ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত মোট ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১৪ সালে। কিন্তু একনেক অনুমোদনসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করা হয় ২০১৬ সালে। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে। এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই সময়ের মধ্যেও শেষ করতে না পারায় ফের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু তিন দফা মেয়াদ বাড়ানোর পরেও কাজ শেষ করতে পারেনি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের কারনে প্রথম দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। আর মোট ৭২ কিলোমিটার রেলপথের ৩২ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে এই ৩২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করা হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক সুবক্তগিন সারাবাংলাকে জানান, আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি লাকসাম-আখাউড়া ডাবল লাইন প্রকল্পের ৭২ কিলোমিটার পথের ৩২ কিলোমিটার উদ্বোধন করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের কসবা-মন্দবাগ এবং শশীদল-রাজাপুর সেকশনে ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করা হবে সকাল ১১টায়। ওই সময় শশীদল অংশে থাকবেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সূজনসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আর গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ: ঢাকা থেকে আরও বেশি সংখ্যক ট্রেন পরিচালনা করার পাশাপাশি ভ্রমনের সময় কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১২ সালের নভেম্বরে। লক্ষ্য ছিলো এ প্রকল্পের আওতায় অপারেশনাল ক্যাপাসিটি বাড়াতে প্রকল্পের আওতায় সিগন্যালিং ও টেলিকম কাজসহ ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে দ্বিতীয় ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ।

প্রকল্প সুত্রে জানা যায়, ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ৩৩ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার লুপলাইনসহ ১১৬ কিলোমিটার ও চারটি স্টেশন পুনর্নিমাণ করা। আর এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ ২০১৫ সালে শেষ করার কথা থাকলেও ওই বছরে নিয়োগ দেওয়া হয় পরামর্শক। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ এক দফা বাড়ানো হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ করে প্রকল্পের অবকাঠামোগত কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। আর ৮৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় গিয়ে ঠেঁকেছে ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকায়।

প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোভিড-১৯, ইউলিটি পৌঁছাতে দেরি, ঢাকা এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ের কাজসহ নানা কারনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত ডাবল লাইনের কাজ সিগন্যাল ছাড়া মোটামুটি শেষ। ৯ ফেব্রুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ১১ কিলোমিটার পথের উদ্বোধন করবেন। যে ১১ কিলোমিটার আমরা উদ্বোধন করে দেবো সে লাইন দিয়ে নিয়মিত ট্রেন চলাচল করবে।’

ঈশ্বরদী-রূপপুর রেল লাইন নির্মাণ: রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মালামাল পরিবহনের জন্য পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় রূপপুর রেল স্টেশন ও নবনির্মিত ২৬ কিলোমিটার রেললাইনের উদ্বোধনও বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) করা হবে। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মাণ করা এই রেললাইনের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারনে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে দেরি হয়।

এই প্রকল্পের আওতায় ঈশ্বরদী বাইপাস টেক অব পয়েন্ট থেকে ঈশ্বরদী রেলস্টেশন হয়ে পাকশি ইউনিয়নের রূপপুর এলাকা পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেল লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। রূপপুরে নব নির্মিত রেল স্টেশন , ১৩টি লেবেল ক্রসিং গেট, একটি প্লাটফর্ম, ৭টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে এ প্রকল্পের মধ্যেই ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের ২ পাশ জুড়ে লুপ লাইন সংস্কার, প্লাটফর্ম উচু করা এবং ঈশ্বরদীর রিলে ইন্টারকলিং বাদ দিয়ে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মালামাল পরিবহন করার জন্য নির্মাণ করা এই রেলস্টেশন দিয়ে শুরু থেকেই অন্য প্রতিষ্ঠানের মালামালও পরিবহন করা হবে। ফলে রেলের আয় বাড়বে।

সারাবাংলা/জেআর/একে

বাংলাদেশ রেল রেলওয়ে প্রকল্প

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর