Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:৫১

ঢাকা: দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থী হিসেবে তার নাম চূড়ান্ত করেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা থেকে রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংসদের বিরোধী দল এ নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে না। ফলে একক প্রার্থী হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বহাল থাকবেন। এখন কেবল আনুষ্ঠানিকতা বাকি।

সংবিধানের ১২তম সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা চালু হওয়ার পর শুধু ১৯৯১ সালেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ভোট গ্রহণ করা হয়। ওই সময় সংসদে ক্ষমতাসীন বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন ১৪০ জন। অন্য সংসদ সদস্যরা ছিলেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও অন্য সাতটি দলের। সে কারণে ভোট গ্রহণ করার প্রয়োজন হয়।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্বাচন কমিশনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নাম দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনে প্রতিনিধি দল রোববার সকাল দশটা পঞ্চাশে নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত হন।

এসময় সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নামে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করা হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর প্রস্তাবক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সমর্থক হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বিজ্ঞাপন

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পর ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসাবে মো. সাহাবুদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি পার্টির প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় শেখ হাসিনা এই মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন।’

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর বিস্তারিত পরিচয়ও এসময় তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি (মো. সাহাবুদ্দিন) পেশায় একজন আইনজীবী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য। তিনি ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইতিপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘তিনি ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীর দ্বারা সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছাত্র জীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কারা বরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলে সন্তানের পিতা এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনে মনোনয়নপত্র দাখিল সম্পর্কে বলা আছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত দিনে ও সময়ের মধ্যে কোনো সংসদ-সদস্য রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তিকে ওই পদের জন্য মনোনীত করে নির্বাচনি কর্তার কাছে একটি মনোনয়নপত্র দিতে পারবেন, যে মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হিসাবে তার সই থাকবে এবং সমর্থক হিসেবে অন্য একজন সংসদ-সদস্যের সই থাকবে। সেইসঙ্গে যিনি রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত হতে যাচ্ছেন, তারও ওই মনোনয়নে সম্মতিসূচক সইসহ বিবৃতি থাকবে। তবে প্রস্তাবক বা সমর্থক হিসাবে কোনো সংসদ-সদস্য একটির বেশি মনোনয়নপত্র সই করবেন না।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নির্বাচনি কর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ নির্বাচনে ভোটার সংসদ সদস্যরা। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনসহ মোট আসন ৩৫০টি। এদিকে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত কোনো দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়নি। যেহেতু রোববার পর্যন্ত মনোনয়ন জমার শেষদিন, তাই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’

রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পাঁচ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।

সারাবাংলা/জিএস/এনআর/এমও

২২তম রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর