Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৫০ তালগাছে কীটনাশক প্রয়োগ: পরবর্তী শুনানি ও আদেশ ২৩ ফেব্রুয়ারি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:০৭

ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় সরকারি রাস্তার পাশে লাগানো অর্ধশত তালগাছে কীটনাশক প্রয়োগের ঘটনায় করা জিডি’র পরিপ্রেক্ষিতে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইনগত কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে এ ঘটনায় দৈনিক প্রথম আলোর বাগমারা প্রতিনিধিকে তালগাছের সংবাদ সংক্রান্ত বিষয়ে কথোপকথনের রেকর্ডসহ আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বস্তুনিষ্ঠতার পাশাপাশি কীটনাশক প্রয়োগের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার আলমকেও ওইদিন আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।  এ সংক্রান্ত খবরের বস্তুনিষ্ঠতার বিষয়ে দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদককে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য রেখেছেন হাইকোর্ট।

এদিন হাইকোর্ট বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ ও আদালতকে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে শাহরিয়ার আলম ওরফে শাহরিয়ার প্রামাণিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জাহিদুল হক জাহিদ। প্রথম আলোর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী।

এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সম্পাদকীয় নজরে নিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার আলমকে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরপর আজ তলব আদেশে আদালতে হাজিরের পর শাহরিয়ার আলমকে বিচারকার্য পরিচালনা করার পুরো সময়ে তাকে আদালত কক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে তাকেও আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ফের হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত ৩১ জানুয়ারি দেশের এক জাতীয় দৈনিকে ‘৫০ তালগাছে কীটনাশক; দোষীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ কেন নয়’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় ছাপা হয়।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বজ্রপাত নিরোধে সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশ সফর করেছেন, কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনাকাটা ও বসানোও হয়েছে। লাখ লাখ তালবীজ সংগ্রহ ও রোপণের কথাও বলা হয়েছে।

কিন্তু দিন শেষে জনগণের অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয়নি। সেখানে সাধারণ মানুষেরাই স্বেচ্ছায় বছরের পর বছর ধরে তালবীজ রোপণ করে বরং বড় ভূমিকা রাখছেন। এখন সেসব তালগাছের ওপরও আসছে আঘাত। সম্প্রতি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাইগাছা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় এক দশক আগে স্থানীয় এক বৃদ্ধসহ কয়েকজন ব্যক্তি সড়কের উভয় পাশে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তালবীজ লাগিয়েছিলেন। সেসব তালগাছ বড় হয়ে এখন ছায়া দিচ্ছে। একটি তালবীজ গাছ হয়ে উঠতেই সময় লাগে এক দশক বা যুগের বেশি।

ফলে বোঝা যায়, কী নিষ্ঠা ও ধৈর্য্য নিয়ে পরিচর্যা করে তালগাছগুলো বড় করে তুলেছেন বাইগাছার সেসব উদ্যোগী মানুষ। আর আমরা অবাক হলাম, সেই গাছগুলো মারতে বাকল তুলে সেখানে কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন শাহরিয়ার আলম নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। প্রকৃতি ও গাছের প্রতি কী রকম নির্দয় হলে এমন কাজ করা যায়, সেটিই প্রকাশ পায় এ ঘটনায়।

শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাহরিয়ার আলম তালগাছ মেরে ফেলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য প্রতিবেদককে অনুরোধও করেন। তালগাছের ছায়ার কারণে শাহরিয়ারের লাগানো আমগাছ ঠিকমতো বেড়ে উঠছিল না। ফলে এমন কাণ্ড করেছেন তিনি।

এমন অমানবিক কাজের জন্য শাহরিয়ার আলম ওরফে শাহরিয়ার প্রামাণিককে আইনের আওতায় আনা হোক। এ ছাড়া বন বিভাগের স্থানীয় দায়িত্বশীলদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, মরতে বসা তালগাছগুলোকে সারিয়ে তোলার দ্রুত পদক্ষেপ নিন।

পরে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর