Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে সহায়তা করছে না কেউই’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০০:১৮

ফাইল ছবি

ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবাই সহানুভূতি দেখাচ্ছে। তবে কেউ তাদের দেশে ফেরাতে যথাযথ সহায়তা করছে না। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজ বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে গাম্বিয়ার ঐতিহাসিক লড়াই মানবাধিকারের প্রশ্নে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। গাম্বিয়া আইসিজেতে মামলা করে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা আশা করি, একসময় এই বিচার শেষ হবে, রায় আসবে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে বিচারহীনতার সংস্কৃতি শেষ হবে। এজন্য গাম্বিয়াও আমাদের হৃদয়ে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবাই সহানুভূতি দেখাচ্ছে। তবে কেউ প্রত্যাবাসনে যথাযথ সহায়তা করছে না। মিয়ানমারের ওপর অনেক দেশ নিষেধাজ্ঞা দিলেও ঠিকই ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে বিনিয়োগ করছে। বহুপক্ষীয়ভাবে এই ইস্যুর সমাধান করতে হবে।’

ঢাকা সফররত গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দেশটির প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত মামাদু তাঙ্গারা বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুকে গাম্বিয়া বিশেষ গুরুত্ব দেয়। সে কারণে আমরা এই ইস্যুতে অ্যাডভোকেসি করছি। রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমে শান্তি ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরতে হবে। এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ওআইসি, জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে গাম্বিয়া।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা কোনোভাবেই বরদাশত করা যাবে না। এই গণহত্যায় জড়িতদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে বিশ্বজুড়ে সংকট চলছে। আর এ সংকট থেকেই প্রমাণিত হয়, আমরা গ্লোবাল ভিলেজে রয়েছি। আমরা একযোগে এই সংকট থেকে উত্তরণ চাই। সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সফরে আসার পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক ইস্যু, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা দুপক্ষের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চাই।’

এরই মধ্যে কক্সবাজারের একাধিক রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে সরেজমিনে এই জনগোষ্ঠীর দুর্দশা দেখার কথা জানান গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা বোঝা কাঁধে নিয়ে বাংলাদেশ অসাধারণ মানবিক উদারতার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক বিশ্বকে আরও সক্রিয় সহযোগিতা করতে হবে। গাম্বিয়া এই সংকট সমাধানে সহযোগিতায় সবসময়েই বাংলাদেশের পাশে থাকবে। মিয়ানমার সরকার এবং দেশটির জান্তা বাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা ঘটিয়েছে তা কখনই মেনে নেওয়া যায় না। এর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যে মামলা চলছে সেই মামলা চালানোর ব্যয়ভার কমাতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গাদের প্রতি সকলের সহিংস প্রকাশ করা জরুরি। রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তার তহবিলে ঘাটতি পড়েছে, সকলের উচিত এই ঘাটতি মোকাবিলায় সহযোগিতা করা।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালক তৌফিক ইসলাম শাতিল।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

ড. মোমেন রোহিঙ্গা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর