রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিতে সাহাবুদ্দিনের আইনি বাধা নেই
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:৫৬
ঢাকা : নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদ অলাভজনক হওয়ায় ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের দায়িত্ব নিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে ইসি কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মো. আলমগীর বলেন, ‘একটি জিনিস বুঝতে হবে, লাভজনক পদের বিষয়ে একেবারে স্পষ্টভাবে বলা আছে— লাভজনক পদ বলতে কী বোঝায়, যদিও তালিকা দেওয়া নেই। তবে লাভজনক পদের ক্ষেত্রে বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত এবং কোনো প্রতিষ্ঠানে যদি সরকারের ৫০ শতাংশের অধিক অর্থ থাকে, তাহলে সেই পদে নিয়োগকে বলা হবে লাভজনক পদ। এখানে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী, উনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী না। এগুলো হলো- সাংবিধানিক পদ। যেহেতু সাংবিধানিক পদ তো আর লাভজনক পদের ডেফিনেশনে (সংজ্ঞা) পড়ে না।’
দুদক কমিশনাররা লাভজনক কোনো পদে যোগদান করতে পারেন না। রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক নাকি অলাভজনক এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘দুদকের আইনে বলা আছে, কমিশনাররা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না। কিন্তু আপনারা জানবেন যে, নির্বাচন কমিশন যখন এটি করেছে, তখন আইন-কানুন জেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ যখন রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন তখন এটি নিয়ে কোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। বিচারপতির ক্ষেত্রেও একই আইন যে, ওনারা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘ওই সময়ে একটি মামলা হয়েছিল। মামলায় হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছিলেন। সেখানে বলা আছে, এতে কোনো বাধা নেই এবং সেই আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিলও হয়নি। আমাদের সামনে উচ্চ আদালতের একটি সুনির্দিষ্ট উদাহরণ রয়েছে, রাষ্ট্রপতির পদকে লাভজনক পদ বলা যাবে না। আদালতের রায়ে বলা আছে, লাভজনক পদ বলতে বোঝাবে, প্রজাতন্ত্রের যারা কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের। এটি স্পষ্ট বলা আছে। এটি উনার (মো. সাহাবুদ্দিন) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হতে উনার আইনগত কোনো বাধা নেই।’
তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল এবং আমাদের আইন যেটি বলে সেটি হলো— হাইকোর্ট বা আপিল বিভাগের যদি কোনো রায় থাকে, সেই রায় আইন হিসেবে গ্রহণ করা হবে। উচ্চ আদালতের রায়ে বলা আছে, বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের ক্ষেত্রে উনি যখন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার সময় মামলা হয়, তখন এ মামলাটা খারিজ হয়ে গিয়েছিল এবং আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির পদটি লাভজনক পদ নয়। এটি সাংবিধানিক পদ। অতএব এটি তার জন্য বাধা হবে না’ যোগ করেন ইসি আলমগীর।
রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনের (মঙ্গলবার) আগেই গতকাল মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি যদি আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এর মাধ্যমে কি সেই সুযোগটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিনা ? এটি আইনসিদ্ধ হলো কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ‘এটি অবশ্যই আইনসিদ্ধ। আইনে স্পষ্ট লেখা আছে যে, যদি একাধিক প্রার্থী না থাকে এবং মনোনয়নপত্র বাছাই করার পরে যদি দেখা যায়, উনার মনোনয়নপত্র সঠিক আছে, বৈধ আছে। তাহলে ওইসময় তাকে নির্বাচিত হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেবেন। এটি আর প্রত্যাহার করার জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই।’
সারাবাংলা/জিএস/একে