মাশরাফির বিনয়ে মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪৬
ঢাকা: বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানে নিজের বসার আসন থেকে সরে গিয়ে পিছনের সারিতে বসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ পেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। প্রধানমন্ত্রী মাশরাফির নাম উল্লেখ করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলে উপস্থিতি সকলে করতালি দিয়ে স্বাগত জানান।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ‘বীর নিবাস’র চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল প্রান্তে সংযুক্ত ছিলেন। পরে তিনি নড়াইল প্রান্তে বীর নিবাস প্রাপ্ত উপকারভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
নড়াইল জেলা প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে উপকারভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুস সবুরকে অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য মাইক্রোফোন হাতে তুলে দেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুস সবুর মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুরু করলে কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত থেকে তাকে বসতে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। এসময় জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, সংসদ সদস্য মাশরাফিসহ সামনের সারির কয়েকজন নিজেদের আসন ছেড়ে দিয়ে তাকে বসার জায়গা করে দিতে ব্যস্ত হন।
এসময় জেলা প্রশাসক তার চেয়ারে বসার আহ্বান জানালে শেখ আব্দুস সবুর কিছুটা অনীহা প্রকাশ করে সে চেয়ারে বসেন। এতে জেলা প্রশাসক কিছুটা ডানপাশে সরে গেলেও সামনের সারিতে সবার স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে পাশে থাকা মাশরাফি বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিজের আসনটি ছেড়ে দিয়ে নিজে গিয়ে পিছনের সারিতে বসেন এবং জেলা প্রশাসককে তার ছেড়ে দেওয়া চেয়ারে বসার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা গণভবন প্রান্ত থেকে বলেন, ‘ওনাকে বসতে দাও, বসাও। হ্যাঁ, বসে বলেন, বসেন।’ পরে তিনি মাশরাফির নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘ধন্যবাদ মাশরাফি’।
এর আগে শেখ আব্দুস সবুর যখন বক্তব্য দিতে আসেন তখনই মাশরাফি তাকে নিজের আসনে বসে বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ করেন। মাশরাফি আব্দুস সবুরকে বলেন, ‘আপনি এই জায়গায় বসুন। আমি পিছনে বসি।’ তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সবুর মাশরাফির আহ্বানে সাড়া না দিয়ে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুরু করেন। বক্তব্য শুরুর কিছুক্ষণ পরই প্রধানমন্ত্রী তাকে আসনে বসে বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানান।
শহিদ ও প্রয়াত এবং অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রী-সন্তানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ৩০ হাজার বীর নিবাস তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আজ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে বীর নিবাস হস্তান্তর করা হয়।
ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, বীর নিবাসের প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব এম ইদ্রিস সিদ্দিকী। এছাড়া বিভিন্ন প্রান্তে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। আর গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীসহ তার কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/আইই