‘কঠোর হচ্ছেন শেখ হাসিনা, অর্থপাচারকারীদের ছাড় নয়’
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:১৬
ঢাকা: অর্থপাচারকারী ও অপকর্মকারীদের সাবধান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা কঠোর হচ্ছেন। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা অন্যায় করবেন, অপরাধ করবেন দলের পরিচয় ব্যবহার করে, তাদের ছাড় নেই। আমি আবারও সতর্ক করে দিচ্ছি। আমরা এতো উন্নয়ন করছি আর গুটিকয়েক অপকর্ম করে সেটাকে ম্লান করবে, সেটা হতে দেব না।’
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আছি। নির্বাচনের আগে যতক্ষণ জনগণ আমাদের ক্ষমতায় রাখবে ততদিন আমরা ক্ষমতায় থাকব। লাফালাফি বাড়াবাড়ি যতই করেন, জনগণের কাছে এখনো ডাক দিয়ে সাড়া ফেলতে পারেননি। সংবিধান থেকে একচুলও আমরা নড়ব না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। কোনো নড়ন-চড়ন হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভুলে যান। ওই অস্বাভাবিক সরকার, অসাংবিধানিক সরকার বাংলাদেশে আর আসবে না।’
তিনি বলেন, ‘সরকার পদত্যাগ করবে কেন? মামা বাড়ির আবদার? কোন দোষে সরকার পদত্যাগ করবে? কি কারণে নির্বাচনের আগে সরকারের পতন হবে? হাওয়া ভবনের যুবরাজকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য ওই খাম্বা সরকার ক্ষমতায় বসবে? বাংলাদেশের মানুষ এই লুটেরা-খাম্বা সরকার, অর্থ পাচারকারীকে এই দেশের ক্ষমতার মঞ্চে আর বসতে দেবে না।’
আগামী নির্বাচন অবধি আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে জানিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাউকে নামতে দেব না, একথা বলবেন না। সবাই নামবে। রাজপথ সবার। রাস্তা সবার। কিন্তু রাস্তায় নামলে ২০১৩/১৪ সালের মতো ৫০০ মানুষ পুড়িয়ে মারবেন, অগ্নিসন্ত্রাস করতে রাস্তায় নামবেন, সরকারি অফিস পোড়াবেন, রিকশাওয়ালা, সিনএনজি ড্রাইভার, বাস ড্রাইভার, নিরীহ যাত্রীদের পুড়িয়ে মারবেন। মানুষ ভয় পায় আপনাদের অগ্নিসন্ত্রাসকে। আমরা জনগণের স্বার্থের পাহারাদার। অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাহারাদার থাকব।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ছাত্রলীগের নামে যারা অপকর্ম করছেন এগুলো দুর্বৃত্তের কাজ। তাদের পরিচয় তারা দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তদের আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠনে থাকার অধিকার নেই। অপকর্মকারীদের শেখ হাসিনা ছাড় দেন না। তাই যারা অপকর্ম করবে তাদের বিরুদ্ধেও খেলা হবে।’
অর্থপাচারকারীরা সাবধান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা কঠোর হচ্ছেন। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমি আবারও সতর্ক করে দিচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় কিছু কিছু বিষয় আসছে। কত উন্নয়ন। আগামীকালও কালশীতে চোখধাঁধানো উড়ালসড়ক উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা এতো উন্নয়ন করছি আর গুটিকয়েক অপকর্ম করে সেটাকে ম্লান করবে- সেটা আমরা হতে দেব না।’ তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এই অপকর্মকারীদের দলে স্থান দিয়ে মিছিল বড় না করার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন খেলা হবে। মোকাবিলা হবে। আবোল তাবোল না বলে নির্বাচনে আসুন। আমাদের হুমকি-ধামকি দিয়ে লাভ নেই। পালাবেন আপনারা, আমরা পালাব না। আমাদের পালানোর জায়গা বাংলাদেশ। আমরা দেশের বাইরে পালাব না। আপনারা তো পালিয়েছেন। এই সৎ সাহস নেই যে, দেশের মাটিতে এসে আন্দোলন করবে। লন্ডন থেকে আদেশ দেয় ফখরুল বেচারা ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সাড়া দেয়। সম্মেলন করে না। দলের কোনো শাখায় সম্মেলনও হয় না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ আরও অনেকে।
সারাবাংলা/এনআর/এনএস