Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিদেশিদের সম্পর্কও নিচে নামবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৩০

চটগ্রাম ব্যুরো: গণতন্ত্র হুমকিতে পড়লে বিদেশিরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ব বিবেক আজ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ঢাকায় অবস্থান করা বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা বার্তা দিচ্ছেন পরিষ্কারভাবে। যদি বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিচের দিকে যায় তাহলে তাদের সঙ্গে সম্পর্কও নিচের দিকে যাবে।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ির নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পিছে পিছে ঘুরছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যদি আগের নির্বাচনের মতো করেন, দিনের ভোট রাতে চুরি করেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ বুঝিয়ে দেবে ‘কত ধানে কত চাল। আজকে আওয়ামী লীগ ভীত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে এ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে তারা বিদায় করবে। আওয়ামী লীগ আজ এতিম হয়ে গেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে পুলিশের পিছে পিছে ঘুরছে।’

সরকার আইনের অপব্যবহার করছে অভিযোগ করে আমির খসরু বলেন, ‘আইন রক্ষার জন্য একজন থাকবে। নয়ত পুলিশ থাকবে নতুবা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা থাকবে। দুইটা তো থাকতে পারে না। দেশে যদি আইন থাকে তাহলে পুলিশ থাকবে। দেশে যদি আইন না থাকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দা, চুরি নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবে। তবে আইনের অপব্যবহার করে বাংলাদেশের মানুষকে দমানো যাবে না।’

বিজ্ঞাপন

জনগণ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাবে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামের আজকের পদযাত্রার সমাবেশ ওয়াসার মোড়, এনায়েত বাজার মোড় পার হয়ে গেছে। লক্ষ জনতা রাস্তায় নেমে গেছে। এরা কেউ বাড়ি ফিরে যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে এ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে তারা বিদায় করবে। জনগণ এই ফ্যাসিস্টের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে দেশে নিরপেক্ষ সংসদ ও নিরপেক্ষ সরকার আনবে যাদের সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে।’

পুলিশ বাহিনির সমর্থন না থাকলে আওয়ামী লীগ রাস্তায় নামতে পারবে না জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মেগা পদযাত্রা শুরু করেছি তাই আরেকটা দলের ছটফটানি শুরু হয়ে গেছে। সে দল হচ্ছে চোরের দল, ডাকাতদের দল, ব্যাংক লুটেরাদের দল, মানি লন্ডারিং-এর দল। সে দলের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। যদি আস্থা থাকত পুলিশ বাহিনীর সমর্থন নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করত না।’

‘পুলিশ তাদের সমর্থন যদি উইথড্রো করে তাহলে তারা রাস্তায় নামতে পারবে না। আমরা রাস্তায় আছি, থাকব। এই সরকারের পদত্যাগ করিয়েই আমরা ক্ষ্যান্ত হবে। তাদের দলের নেতারা বলেন শেখ হাসিনা আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। পাগলে কি না বলে ছাগলে কি না খায়।’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে নানা ছলচাতুরি শুরু করেছে জানিয়ে বিএনপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, ‘যে সরকারের অধীনে কবর থেকে উঠে এসে মরা মানুষ ভোট দেয় তাদের অধীনে নির্বাচন আমরা মানি না। আওয়ামী লিগকে বিশ্বাস করেছিলাম একবার আর বিশ্বাস করবো না।’

‘ক্ষমতায় থাকতে তারা আবার ছলচাতুরি শুরু করেছে। তারেক রহমানের কাছে তারা হেরে গেছে। আগে তারা কি করত জানেন! চট্টগ্রামে শামীম, শাহাদাত, সুফিয়ান, আবু বক্করের নেতৃত্বে যখন মিছিল শুরু হতো তাদের কিছু লোক বোমা মেরে তাদের ঘাড়েই চেপে দিত। সেগুলো আর তারা পারবে না। আপনাদের সংসদ ভেঙে দিতে হবে না। জনগণ আর আপনাদের মানবে না।’

পদযাত্রার কাউন্টার প্রোগ্রাম দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের আসল চেহারা দেখিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের পদযাত্রার কাউন্টার প্রোগ্রাম আওয়ামী লীগ প্রতিটি ইউনিয়নে দিয়েছে। এ কাউন্টার প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের আসল চেহারা উম্মোচিত হয়েছে। হাসিনার সরকারের আমলে মানুষের যে ভোটের অধিকার সেটা ধ্বংস করা হয়েছে। তারা সরকারে আসার পর একটি পুতুল নির্বাচন কমিশন করে দিনের ভো্ট রাতে নিয়েছে।’

‘শেখ হাসিনা মানুষের বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে। প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে। এমন একজনকে রাষ্ট্রপতি পদে বসিয়েছে যিনি আওয়ামী লিগের মধ্যম ও তৃতীয় সারির নেতাও নন। যার বাংলাদেশে কোনো পরিচিতি নেই। আমরা হাসিনার আগের ভোটের ধরণ দেখেছি। এ মিথ্যাবাদীর অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।’

নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, ভিপি হারুনুর রশীদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

পদযাত্রাটি নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে এনায়েত বাজার হয়ে রাইফেল ক্লাব গিয়ে শেষ হয়।

সারাবাংলা/আইসি/একে

আওয়ামী লীগ আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপি শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর