সমস্যা জর্জরিত নোবিপ্রবির ছাত্র হল, ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:১৬
নোবিপ্রবি: নানা সমস্যা ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই চলছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ‘সাবেক স্পিকার আব্দুল মালেক উকিল হল’। ক্যান্টিনে উচ্চমূল্যের খাবার, হলের ভেতরে জমে থাকা ময়লার ভাগার, শৌচাগারে অপরিচ্ছন্নতা এবং সাপ্লাইয়ের পানির সমস্যাসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে বিস্তর অভিযোগ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর হল প্রভোস্ট কৃষি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান রুবেল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে হলের সহকারী প্রভোস্টের দায়িত্বে থাকা সুব্রত ভৌমিক প্রভোস্টের পক্ষে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তবে প্রভোস্টের পদত্যাগের পর থেকে হলটি দীর্ঘদিন অব্যবস্থাপনায় চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপই করছে না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের ওয়াশরুমগুলো নিয়মিত পরিস্কার করা হয় না, ঠিকমত পানি সাপ্লাই হয় না, হলের ক্যান্টিনে উচ্চমূল্যে খাবার খেতে হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও সব কয়টা ফ্লোর ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে।
মালেক উকিল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় বর্ষের সজিব হোসাইন বলেন, ‘আমাদের হলের ডাইনিংয়ে ভর্তুকি নেই। নেই কোনো তদারকি। যার ফলে বিভিন্ন সময়ে হলের খাবারে পোকামাকড় পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় আমাদের হলের ডাইনিংয়ে যে মূল্যে খাবার দেওয়া হয়, তা একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে বহন করা কষ্টকর।’
তিনি আরও অভিযোগ করে জানান, তিন বেলা খাবারের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে দৈনিক সর্বনিম্ন ১৩০ টাকা খরচ করতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া মালেক হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, হলে প্রভোস্ট থাকাকালীন তিনি আমাদের কথা শুনলেও বাস্তবে কোনো কাজ হতো না। এখন তো হল প্রভোস্ট নেই, এখন কিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হল আশা করবো আমরা?
অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের তিনটি হল- বঙ্গবন্ধু হল, বঙ্গমাতা হল এবং বিবি খাদিজা হলের তুলনায় মালেক উকিল হলে খাবারের দাম অপ্রতুল। মুরগি, মাছ, সবজি যেকোনো খাবারের মূল্যের উচ্চ পার্থক্য রয়েছে। ছেলে এবং মেয়েদের হলের খাবারের প্রত্যেক আইটেমে পার্থক্য রয়েছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করছেন ছাত্র হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ ছাত্র হল চলছে নানা অব্যবস্থাপনায়। দেখার কেউ যেন নেই।
হলের সমস্যা বিষয়ে জানতে চাইলে নোবিপ্রবির উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, ‘হলের প্রভোস্ট না থাকা এবং নানা সমস্যার বিষয় আমরা জেনেছি। এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেবো। আশা করছি অতিদ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, ‘হল প্রভোস্ট পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন, কিন্তু এটি এখনো আমরা গ্রহণ করিনি। কেন তিনি পদত্যাগ করতে চাচ্ছেন, তার সঙ্গে কথা বলে দ্রুত এই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেব। হলে প্রভোস্ট দেওয়া হলে বাকি সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।’
সারাবাংলা/এমও