কালশী বালুর মাঠে বিনোদন পার্ক নির্মাণের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:১৭
ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরের কালশী বালুর মাঠে বিনোদন পার্ক নির্মাণ করা হবে ঘোষণা দিয়ে মিরপুরবাসীকে নতুন খুশির প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালশী ফ্লাইওভারের উদ্বোধন উপলক্ষে মিরপুর বালুর মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এই ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশী মোড়ে নির্মিত ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সারাদেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে নিরাপদ যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাসহ ঢাকা শহরে যানজট ভোগান্তি নিরসনে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের জন্য সব থেকে সমস্যা বেশির ভাগ রাস্তা ছিল উত্তর থেকে দক্ষিণ কিন্তু পূর্ব-পশ্চিমের সংযোগ ছিল না। আমরা সেই পূর্ব-পশ্চিমের সংযোগের ব্যবস্থাও ইতোমধ্যে কয়েকটা করে দিয়েছি। আজকে যে কারণে ইসিবি চত্ত্বর থেকে ডিওএইচএচ পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তা চার লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণসহ দুই হাজার ৩৩৫ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে বৃহত্তর মিরপুর, পল্লবী মাটিকাটা, মানিকদী, ভাষানটেক এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার সর্বস্তরের জনগণ খুব অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ও যাতায়াত করতে পারবেন।
আপনারাই সব থেকে বেশি লাভবান হবেন। এখান থেকে এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর, মহাখালী, রামপুরার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত হবে এবং ঢাকা শহরের যানজট অনেকটা হ্রাস পাবে। এটা যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দ্বার নতুনভাবে উন্মোচিত করবে এবং পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সহজতর হবে। যানবাহন কোনো প্রতিবদ্ধকতা ছাড়াই চলাচল করতে পারবে। আমরা জনগণের সুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখেই পরিকল্পনা গ্রহণ করি।’
ঢাকা সিটি করপোরেশন যাতে জনগণের সেবা দিতে পারে ২০০১ সালে এ জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরশনকে দুই ভাগে বিভক্ত করে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই বিভক্তির পরে আর গত ১২ বছরে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করে ২৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় তিন হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয়ে ১৬টি প্রকল্প ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকার মানুষের খেলার মাঠের, বিনোদনের অভাব খুব অভাব। যেখানে দাঁড়িয়ে আজকে বক্তব্য দিচ্ছি, আমি জানি অনেকেই এখানে একটু ফাঁকা জায়গা পেলেই বিল্ডিং বানাবে, ঘর বানাবে। অথচ আমাদের ছেলে-মেয়েদের খেলার জায়গা নাই। একটু খোলামেলা জায়গা থাকবে না। প্রবীণদের চলাচলের জায়গা থাকবে না। কাজেই আমি ঘোষণা দিচ্ছি এই কালশী বালুর এটা একটা বিনোদন পার্ক হবে।’
‘এখানে ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার ব্যবস্থা হবে। এই মাঠে শিশুদের জন্য পার্ক করা হবে। যুবকদের জন্য ক্রিকেট ফুটবল বা অন্যান্য খেলাধুলার প্র্যাকটিস করা, সেইভাবেই এটাকে সাজানো হবে। এ ছাড়া বয়স্করা যাতে হাঁটাচলা করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে। যারা আবাসিক প্রকল্প নিতে চান তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে। ঢাকা শহর তো আর এখন ঢাকা শহর নাই আস্তে আস্তে বর্ধিত হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা এতো ভাল হয়ে গেছে। কিন্তু এই মাঠ যেন মাঠ থাকে, এটা যেন মনে থাকে। কি থাকবে তো?’
এ সময় উপস্থিত জনতা হাততালি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নতুন ঘোষণাকে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশেনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম, প্রকল্প সম্পর্কিত উপস্থাপনা ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মনোয়ারুল ইসলাম সরদার।
সারাবাংলা/এনআর/ইআ