Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকাকে ‘স্মার্ট সিটি’ হিসাবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩১

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এই ঢাকা সিটিও স্মার্ট সিটি হবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালশী ফ্লাইওভারের উদ্বোধন উপলক্ষে মিরপুর বালুর মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশী মোড়ে নির্মিত ফ্লাইওভারের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা তার সরকারের টানা মেয়াদে সারাদেশে যোগাযোগ অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ ঢাকা শহরে যানজট ভোগান্তি নিরসনে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের উপর মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিল। এখানে নাকি দুর্নীতি হয়েছে। আমি দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে এসেছি। নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য না। দেশের মানুষের ভাগ্য গড়াই আমার লক্ষ্য।’

‘আমার দেশের অর্থ অন্যকে দিয়ে সেখান থেকে দুর্নীতি করবো এই মানসিকতা আমাদের নেই। এই শিক্ষা বাবা-মা আমাদেরকে দেয়নি। তাই আমি বলেছিলাম, প্রমাণ করতে হবে দুর্নিীতি হয়েছে এবং বিশ্ব ব্যাংকের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু করবো না। নিজস্ব অর্থায়নে করবো। সেই ওয়াদা করেছিলাম।’

পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের পাশে জনগণকে থাকার জন্যও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেক হোঁমড়া-চোমড়া ব্যক্তি ছিল না। কিন্তু সাধারণ মানুষ আমার পক্ষে ছিলেন। আমরা নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশ পারে। আমরা ইচ্ছা করলে পারি। যে কথা জাতির পিতা ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন, ‘‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। দাবায়ে রাখতে পারবা না।’’ এটাই ছিল জাতির পিতার কথা, বঙ্গবন্ধুর কথা এবং তা কেউ পারেনি, পারবেও না ইনশাআল্লাহ।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এই ঢাকা শহরসহ সারাদেশে ব্যাপক যোগাযোগের ব্যবস্থা করছি। মেট্রোরেল চালু হয়েছে। এখন পাতাল রেল করারও পদক্ষেপ নিয়েছি। ঢাকা শহরের চারদিকে রিং রোডও তৈরি করবো। সে ব্যবস্থা নিয়েছি। ঢাকার চারপাশের চার নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে সেখানেও নৌপথ চালু করা, ওয়াটার ওয়ে করার ব্যবস্থাও নিচ্ছি।

ঢাকা মহানগরীকে যানজটমুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের টানা মেয়াদে বিভিন্ন ফ্লাইওভারসহ নানামুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যখন যমুনা নদীর উপর সেতু করতে যাই। প্রথম ওই ডিজাইনে রেলের স্থান ছিল না। আমি বারবার বলেছিলাম রেললাইন করতে হবে। বিশ্ব ব্যাংকই তখন বাধা দিয়েছিল যে রেল লাভজনক হবে না। আর আমি বলেছিলাম অবশ্যই লাভজনক হবে। আমি তাদের কথা মানিনি। পরে যারা এটার কন্ট্রাক্ট নিয়েছিল তাদের সঙ্গে আমি আলাপ করে ডিজাইন করে সেখানে রেলসেতু সংযোজন করেছিলাম।

এখন সেই রেলসেতু কত গুরুত্বপূর্ণ, বিশ্বব্যাংকই আবার ফিরে এসেছে। যমুনা সেতুতে আলাদা করে রেলসেতু করার জন্য। আমি দিয়ে দিয়েছি, করো। একবার বাধা দিয়েছো, করতে দিবা না; লাভজনক হবে না। এখন নিজেরাই এসেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটা আমাদের। দেশকে আমরা চিনি। এর ভাল মন্দ কি আমরা বুঝি? কোথা থেকে কে একজন উড়ে এসে বলবে, আর সেটিই মানতে হবে, সেটা না। আমাদের নিজের চিন্তা ভাবনা থাকতে হবে। নিজেদের দেশ সম্পর্কে জানতে হবে। আমরা সেইভাবেই দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

আজকে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়েই বাংলাদেশ চলবে। সেইজন্য আমাদের গ্রামগুলো আমার গ্রাম আমার শহর প্রত্যেকটা গ্রামে যাতে একেবারে নাগরিক সুবিধা পায় সেই গ্রামকেও উন্নত করার পদক্ষেপ নিয়েছি।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কারণেই করোনাকালে আমাদের অর্থনীতিতে গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া বৈশ্বিক সংকটের কারণে বর্তমানে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান পুর্নব্যক্ত করেন। পাশাপাশি আসন্ন রমজান মাসে নিম্ন আয়ের এক কোটি মানুষকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে খাদপণ্য সরবরাহ করা হবে বলেও অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকা শহরে অনেক খাল ছিল। অনেক জলাধার ছিল। সেই আইয়ুব খানের আমল থেকে দেখেছি। তারপরে জিয়াউর রহমান, এরশাদ যে যখন এসেছেন খাল, পুকুর ভরাট করে গেছে। আমরা এখন কিছু খাল উদ্ধার করছি। কারণ এই খালগুলি হচ্ছে একটা শহরের শিরা-উপশিরার মতো। এগুলো না থাকলে আবহাওয়া সুন্দর থাকে না। মানুষের জীবন দূষণ হয়। সেগুলো যদি বন্ধ না হতো তাহলে দূষণ হতো না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্যে চমৎকার একটি দেশ। সবুজে ভরা, ফুল-ফল-পাখি অত্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরা। এটাকে আমরা সে ভাবেই গড়ে তুলবো। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো। এই ঢাকা সিটিও স্মার্ট সিটি হবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে জন্যই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশেনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম, প্রকল্প সম্পর্কিত উপস্থাপনা ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. মনোয়ারুল ইসলাম সরদার।

সারাবাংলা/এনআর/ইআ

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট সিটি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর