Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সফল পেঁয়াজ চাষি শেখ হাসিনা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৪৯

ঢাকা: করোনা অতিমারি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রাদুর্ভাব থেকে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি গণভবনে কৃষি চাষাবাদে অনন্য নজির গড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনে মোট চাষের প্রায় অর্ধেক জমিতে এরইমধ্যে ৪৬ মণ পেঁয়াজের ফলন হয়েছে। বাকি জমিতে আরও প্রায় ৫০ মণের বেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাবে।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনের অব্যবহৃত প্রতি ইঞ্চি জমিতে বিভিন্ন ফসলফলাদির চাষাবাদ করে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

গণভবন সূত্র জানায়, গেরস্থ বাড়ির মতোই পুরো গণভবনকেই তিনি প্রায় একটি কৃষি খামার বাড়িতে পরিণত করে সৃষ্টি করেছেন বিরল উদাহরণ। গণভবনের বিশাল খোলা জায়গায় হাঁস-মুরগি, কবুতর, গরু পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ধান, শাক-সবজি, ফুল-ফল, মধু ও মাছ চাষ থেকে শুরু করে তিল-সরিষার সঙ্গে পেঁয়াজও চাষ করেছেন মাটি ও মানুষের সঙ্গে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

গণভবন সূত্র আরও জানায়, রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মোট চাষের প্রায় অর্ধেক জমির পেঁয়াজ কাটা হয়েছে। এতে ফলন পাওয়া গেছে ৪৬ মণ। বাকি জমিতে আরও ৫০ মণ এর বেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশি পেঁয়াজের বর্তমান বাজার দর ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এতে গণভবনে ফলন পাওয়া ৪৬ মণ পেয়াজের দাম আসে আনুমানিক ৬৫ হাজার থেকে ৭৩ হাজার টাকা। ৫ জনের মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে মাসে ৫ কেজি হিসেবে পেঁয়াজের প্রয়োজন ধরলে গণভবনে উৎপাদিত প্রায় ১০০ মন পেঁয়াজে ৭—৮’শ পরিবারের ১ মাসের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ হবে।

করোনা অতিমারি, রাশিয়া—ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন—পাল্টা স্যাংশনে টালমাটাল বিশ্বে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রায় প্রতিটি বক্তব্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সরকারি, বেসরকারি ও দলের সব অনুষ্ঠানে প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় দেশের জনগণকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নিজে গণভবন আঙ্গিনার পতিত প্রতি ইঞ্চি জমিকে উৎপাদনের আওতায় এনেছেন এবং জনগণের প্রতি করা নিজের আহ্বানকে বাস্তবে রূপদান করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’

প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘এদেশের আলো—হাওয়ায় বেড়ে ওঠা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত। দেশের মাটি—মানুষ, কৃষির সঙ্গে মিশে আছে তার প্রাণ। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ফসলি উঠোনে নানা ধরনের ফসলের আবাদ তারই ছোট্ট একটা দৃষ্টান্ত।’

ইহসানুল করিম জানান, প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার বিষয়টি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালের সবুজ বিপ্লবের ডাক থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

সূত্র জানায়, গণভবন বিশাল খোলা জমিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঁশফুল, পোলাও চাল, লাল চালসহ বিভিন্ন জাতের ধান; ফুলকপি, পাতাকপি, লালশাক, পালং শাক, ধনেপাতা, গ্রাম—বাংলার জনপ্রিয় বতুয়া শাক, ব্রুকলি, টমেটো, লাউ, সিমসহ প্রায় সব ধরনের শীতকালীন শাক—সবজি চাষ করছেন। এ ছাড়া গণভবনে তিল, সরিষা, সরিষা ক্ষেতে মৌচাক পালনের মাধ্যমে মধু আহরণ, হলুদ, মরিচ, পেঁয়াজ, তেজপাতাসহ বিভিন্ন ধরনের মশলা; আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, বরই, ড্রাগন, স্ট্রবেরিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল; গোলাপ, সূর্যমুখী, গাঁদা, কৃষ্ণচুড়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলেরও চাষ করছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি অবসর পেলেই এসব তদারকিও করেন বলে গণভবন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এ সব ফসল ফলাতে ব্যবহার করা হয় গণভবনে গরুর খামারের গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সার। এছাড়াও গণভবনের আঙ্গিনায় আলাদা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরুর খামার, দেশি হাঁস—মুরগি, তিথির, চীনা হাঁস, রাঁজহাস, কবুতরের খামার করেছেন। তিনি গণভবন পুকুরে চাষ করছেন রুই—কাতল, তেলাপিয়া, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এমনকি গণভবন পুকুরে মুক্তার চাষও করছেন শেখ হাসিনা। অবসর সময়ে গণভবনের লেকে মাছও ধরেন তিনি। এরইমধ্যে অবসরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাছ ধরার ছবি প্রকাশ পেলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়।

গণভবন সূত্র জানায়, উৎপাদিত এ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের জন্য সামান্য রেখে গণভবন কর্মচারীসহ দরিদ্র—অসহায় মানুষের মধ্যে বণ্টন করে দেন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

গণভবন পেঁয়াজ চাষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর