চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রদের আবাসিক আলাওল হলের একটি কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের একাংশের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১২ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে রাত দেড়টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক ছাত্রলীগের ‘বিজয়’ গ্রুপের নজরুল ও ইলিয়াছপন্থী নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। গ্রুপটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীদের বেশ কয়েকটি কক্ষ এখনো এ এফ রহমান ও আলাওল হলে রয়েছে। তবে কয়েকদিন আগে আলাওল হলের ৪৪২ নম্বর কক্ষটি দখল নিয়েছে ইলিয়াছের অনুসারীরা। এই নিয়ে রাত দশটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষই রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের ওপর চড়াও হন। ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে অন্তত ১২ জন আহত হন। আহত নেতাকর্মীদের অনেকেই বিশ্বিবদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভাশিস চৌধুরী বলেন, মারামারির ঘটনায় ১২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এদেরমধ্যে এক জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেকে) পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সোহরাওয়ার্দী হলের বিজয় গ্রুপের নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আলাওল হলে আমাদের ৫৭টি কক্ষ রয়েছে। রাত ১০টার দিকে আমরা যখন কক্ষ ফেরত চাইতে গেলে আমাদের তিরস্কার করা হয়েছে। পরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কর্মীরা যখন শহিদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন। তখন ইচ্ছাকৃতভাবে ইলিয়াসের অনুসারীরা হামলা করে। আমরাও প্রতিহত করেছি।
বিজয় গ্রুপের আরেক পক্ষের নেতা মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘আমরা শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য যাচ্ছি। সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীরা গতিরোধ করে আমাদের হামলা করে। গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক এস এম ফয়সাল ও অনিক দাস নামের আরেক নেতাকে কুপিয়ে জখম করে। ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছেন। অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত বছর ৩১ জুলাইয়ের কমিটিতে পদ পাওয়া ও নেতৃত্ব দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিজয় গ্রুপ দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একটি পক্ষ আলাওল ও এ এফ রহমান হল দখল করেন। আরেকটি পক্ষ সোহরাওয়ার্দী হল দখলে নেয়। সোহরাওয়ার্দী হলের নেতৃত্ব রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম ও পদবঞ্চিত দেলোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন নেতা। আর আলাওল ও এ এফ রহমান হলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ।