দালালি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নাই— বিএনপিকে প্রধানমন্ত্রী
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:৫০
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওরা (বিএনপি) দেখি দেশে-বিদেশে হাহাকার করে বেড়ায়, কেঁদে বেড়ায়। মনে হয় বাইরে থেকে কেউ এসে একেবারে দোলায় করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সেই স্বপ্নে বিভোর তারা। হয়তো এক সময় সেটা করতে পেরেছে দালালি করে। এখন আর সেই দালালি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নাই।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সরকারবিরোধী বাধা আসবেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রথম যখন সরকার গঠন করলাম ২১ বছর পর। যখন ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরলাম। তখন এদেশের মানুষের চেতনা ফিরল। মানুষের ভেতর একটা আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলাম।’
২০০৮ সালের নির্বাচনে ফের সরকার গঠনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘এখন তারা আন্দোলন করবে, সরকার উৎখাত করবে। অনেক কিছু বলে যাচ্ছে। অনেক আয়োজনও করেছে। আর আমাদের দেশে কিছু মানুষ থাকে। অসময়ে নীরব সময়ে সরব হয়ে ওঠেন। যখন ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি খুব হম্বিতম্বি করেছে, মিটিং করছে, মিছিল করছে— আমরা কিন্তু বাধা দিইনি। কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ তো তখন একটা মিছিল মিটিং করতেও পারত না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি যেভাবে অত্যাচার করেছে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর। আমাদের মেয়েদের রাস্তায় ফেলে পাঠিয়েছে। গায়ের কাপড়-চোপড়ও ছিঁড়ে ফেলেছে। একদিকে ছাত্রদল আরেকদিকে পুলিশবাহিনী। সেকথা আমরা ভুলি কি করে? তারপরও আমরা কিন্তু প্রতিশোধ নিতে যাইনি। আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকেই নজর দিয়েছি।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। নিজের দেশ সম্পর্কে এখন অনেক জানে। ইতিহাস সম্পর্কে জানে এবং আমাদের লক্ষ্য কী সেটাও তারা জানে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর দু’বার আমরা পর পর সরকারে এসেছি। আমরা তো জনগণের জন্য কাজ করেছি। এটা তো আর কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটাকেও ধ্বংস করতে তাদের চেষ্টা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত মিলে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। এটা মানুষ কিভাবে ভুলবে? জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা। এভাবে জীবন্ত মানুষকে কেউ পুড়িয়ে মারতে পারে সেই দৃষ্টান্ত বিএনপিই দেখিয়েছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘তারা যে আগুন নিয়ে খেলেছিল- বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের বেলায় এই আগুনের খেলাটা খেলে তখন তাদের কি অবস্থাটা হবে? সেটা কি একবারও ভেবে দেখে বিএনপি? কাজেই এই অগ্নিসন্ত্রাসী যারা এদের সম্পর্কে দেশের মানুষকে আরও সজাগ থাকতে হবে।’
দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওদের অপকর্মের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। ওরা লুটপাট করতে আসে। ওরা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। তাদের পাচার করা টাকা তো আমরা উদ্ধারও করেছি। যারা নিজের দেশের অর্থ অন্য দেশের কাছে তুলে দেয়। নিজের দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দেয়। আর নিজের দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মারে- তারা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে কিভাবে?’ সেই প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় সূচনা বক্তব্য দেন- দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিশিষ্টজনসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর বিক্রম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য নির্মল চ্যাটার্জি, মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। আর বিশিষ্টজনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, চিত্রনায়ক ফেরদৌস।
সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম